চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা এবং রাত দশটার মধ্যে মেয়েদের হলে প্রবেশের নির্দেশনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্রীরা। বুধবার (২০ জুলাই) রাত নয়টার দিকে বিভিন্ন ছাত্রী হল থেকে উপাচার্য বাসভবনের সামনে জড়ো হন ছাত্রীরা৷
এ সময় ছাত্রীদের স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে রাতের ক্যাম্পাস। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের চারদফা দাবি মেনে নিলে রাত ১টায় আন্দোলন থেকে সরে আসেন তারা৷
জানা যায়, গত রোববার (১৭ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হল সংলগ্ন এলাকায় ৫ জন দুর্বৃত্তের হাতে শারীরিক হেনস্তার শিকার হন এক ছাত্রী। ওই সময় তার সাথে থাকা তার বন্ধুকেও মারধর করা হয়৷ ছিনিয়ে নেওয়া হয় মোবাইল ফোন। পরে এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিলে ৫ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যৌন নিপীড়নের এ ঘটনার জেরে ছাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরইমাঝে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের হলে প্রবেশের ব্যাপারে সময়সীমা বেঁধে দেয়। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন করে ক্ষোভ দেখা দেয়।
রোববার রাতের যৌন হয়রানির ঘটনার বিচার চেয়ে শিক্ষার্থীরা এর আগেও বিক্ষোভ করেন। পরে হলে প্রবেশের সময়সীমা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশনা পাওয়ার পর ক্ষুব্ধ ছাত্রীরা বুধবার রাতে উপাচার্যের বাসভবনের দিকে যাত্রা করেন ও বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় তারা চারদফা দাবির কথা জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি ছাত্রীদের দাবিগুলো হলো—
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও মেডিকেল সেন্টারে প্রবেশের সময়সীমা তুলে নেয়া ও ক্যাম্পাসে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
২. যৌন নিপীড়ন সেল ভেঙে নতুন করে কার্যকরী সেল গঠন করতে হবে। ওই সেলে বিচার নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ সময় থাকবে এক মাস। এক মাসে বিচার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে যৌন নিপীড়ন সেল নিজে শাস্তির আওতাভুক্ত হবে।
৩. যৌন নিপীড়ন সেলে জমা হওয়া অভিযোগগুলো আগামী চার কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৪. যৌন নিপীড়নের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর বিচার আগামী ৪ কার্যদিবসের মধ্যে করতে না পারলে প্রক্টরিয়াল বডির সবাইকে পদত্যাগ করতে হবে।
লিখিত আকারে পেশকৃত এসব দাবি মেনে নেওয়ার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান স্বাক্ষর করলে ছাত্রীরা আন্দোলন থেকে সরে আসেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান ইত্তেফাককে বলেন, আন্দোলনরত ছাত্রীরা আমাদের কাছে লিখিত আকারে ৪ দফা দাবি জানিয়েছে। আমরা দাবিগুলো মেনে নিয়েছি। ছাত্রীরা এখন হলে ফিরে গিয়েছে।