মৌলভীবাজারের বড়লেখায় সাম্প্রতিক বন্যায় স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রায় ৯৫ কিলোমিটার সড়ক পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি নামায় বন্যার ভয়াবহতার চিহ্ন নিয়ে বেরিয়ে আসছে এসব সড়ক। বন্যার পানির তোড়ে এগুলোর বিভিন্ন অংশের পিচ ও পাথর সরে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে বিশাল গর্তের। কোনো কোনো সড়ক ঢলে ভেঙেছে। এ অবস্হায় সড়কে চলতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের। স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বড়লেখা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত বন্যায় তাদের অধীনে থাকা উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কের মধ্যে ৩০টি এবং ১৫টি গ্রামীণসহ ৪৫টি সড়কের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের পরিমাণ প্রায় ৯৫ কিলোমিটার।
ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কগুলো হচ্ছে—দাসেরবাজার-ফকিরবাজার সড়ক, বড়লেখা আরএইচডি চৌমুহনী-হাকালুকি হাওর ভায়া কাননগো বাজার জিসি সড়ক, তালিমপুর আরএইচডি আজিমগঞ্জ জিসি ভায়া তালিমপুর ইউপি অফিস সড়ক, আরএইচডি বরইতলি-বড়লেখা জিসি ভায়া মুছেগুল হিনাইনগর সড়ক, রতুলী আরএইচডি আজিমগঞ্জ জিসি সড়ক, কালিবাড়ী বাজার-নিজবাহাদুরপুর ইউপি অফিস সড়ক, নিজবাহাদুরপুর ইউপি অফিস ভায়া ইটাউরি-বিহাইডর সড়ক, সুজাউল ভায়া পকুয়া সুনাই নদী সড়ক, সুজাউল-ভাগল-চরিয়া-দৌলতপুর সড়ক, দাসেরবাজার ইউপি অফিস-সুড়িকান্দি সড়ক, দাসেরবাজার-বর্ণি ইউপি (ফকির বাজার জিসি) ভায়া গোডাউন বাজার সড়ক, শাহবাজপুর ইউপি অফিস-পাল্লাথল বাজার সড়ক, বর্ণি ইউপি অফিস (ফকির বাজার) মনারাই-মনাদি বাজার সড়ক, বর্ণি ইউপি অফিস ভায়া ঈদগাহ বাজার ভায়া আহমদপুর-মুদত্পুর সড়ক, কাঁঠালতলী বাজার-তেরাকুড়ি-সুজানগর ইউপি অফিস সড়ক, বর্ণি ইউপি অফিস-নয়াবাজার ভায়া মিহারী সড়ক, রতুলী-লক্ষ্মীছড়া সড়ক, অজমির ছোটলেখা-দক্ষিণভাগ সড়ক, বিছরা বাজার-মাইজগ্রাম সড়ক, সত্পুর-কাজিরবন্দ সড়ক, দাসেরবাজার আরএইচডি বাদেজঙ্গল ভায়া দাসেরবাজার কলেজ সড়ক, আরএইচডি উত্তর চৌমুহনী-বালিছড়া সড়ক, শিমুলিয়া-তেড়াকুড়ি ভায়া সহিদাবাদ-শেওরাডিগা সড়ক, আজিমগঞ্জ-রফিনগর সড়ক, আরএইচডি তারাদরম-বড়থল সড়ক, আরএইচডি সফরপুর সড়ক, আরএইচডি সুজানগর ইউপি অফিস-সুজানগর পাথারিয়া কলেজ সড়ক, দাসেরবাজার-খোজার মসজিদ সড়ক ও তালিমপুর আরএইচডি বালিরবিন সড়ক।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আরএইচডি বরইতলি-বড়লেখা জিসি ভায়া মুছেগুল হিনাইনগর সড়কের দক্ষিণ হিনাইনগর (বালিছড়া) এলাকায় সড়কের প্রায় ১০০ ফুট অংশ ঢলে ভেঙেছে। এই জায়গায় এলাকাবাসী সাঁকো নির্মাণ করে পারাপার হচ্ছেন। অন্যদিকে দাসেরবাজার-ফকিরবাজার সড়কের বিভিন্ন অংশে বন্যায় পিচ ও পাথর সরে গেছে। এতে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। দাসেরবাজার-ফকিরবাজার সড়কের মতো অন্যগুলোর অবস্হা একই রকম।
এলজিইডি বড়লেখা উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলী প্রীতম সিকদার জয় বলেন, অনেক গ্রামীণ সড়কের ওপর এখনো পানি। যেসব সড়কে পানি নেমেছে সেগুলো থেকে বন্যার ক্ষত বেরিয়ে আসছে। আমরা সরেজমিনে ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের তালিকা তৈরি করছি। এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদা দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামীণসহ ৪৫টি সড়কের বিভিন্ন অংশ মিলিয়ে প্রায় ৯৫ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৮৫ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। পানি সম্পূর্ণ নামলে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি জানা যাবে।