শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নির্বাচন ছাড়া ম্যানেজিং কমিটির অনুমোদন, ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা

আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২২, ১৮:৫৯

রাজিবপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্বাচন না দিয়ে বোর্ড থেকে কমিটি অনুমোদনের অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে। অভিভাবক ও স্থানীয়দের  অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের মেয়ে ও বেয়াইকে সুযোগ-সুবিধা দিতেই তিনি এ কমিটির অনুমোদন নিয়েছেন।  

অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার (২৫ জুলাই) ম্যানেজিং কমিটির সভার মাধ্যমে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাজিবপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কমিটির হওয়ার খবর নতুন সদস্যরা, অভিভাবকমহলসহ এলাকাবাসী জানতে পারেন। অনুমোদন পাওয়া নতুন এ কমিটির অনেকেই জানেন না তাদের থাকার কথা। এসময় কমিটিকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে শিগগির তা বাতিলের দাবি জানান তারা।

নাম প্রকাশ করার শর্তে অভিভাবক ও আগের কমিটির সদস্যরা জানান, বিদ্যালয়টির কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় ২ মাস আগে প্রধান শিক্ষক অভিভাবকদের খসড়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা নিয়মিত সভায় উপস্থাপন করেন। ভোটার তালিকায় অনিয়ম কমিটির নজরে আসা স্বত্ত্বেও নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুমোদন করেন প্রধান শিক্ষক। এদিকে স্কুলের অভিভাবক মহল পরবর্তী নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সুযোগে প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটি গঠনকল্পে মেয়াদোর্ত্তীণ কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের না জানিয়ে কৌশলে রেজুলেশন বোর্ডে দাখিল করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০ জুলাই, ২০২২ দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড, ১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দেন।

নতুন কমিটির সাধারণ শিক্ষক সদস্য নুর-এ-আলম বলেন, ‘এ কমিটি কখন হয়েছে জানি না। আজ  (২৫ জুলাই) সকালে জানতে পারলাম কমিটির মিটিং আছে।’

কমিটির বর্তমান সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, ‘নির্বাচন ছাড়াই আমাকে স্কুলের সভাপতি করে এনেছে এটা আমি পরে শুনেছি। এ নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরো মন খারাপ করেছে। আমি চেয়ারমম্যানের বাড়িতে গিয়ে তার সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছি।’

এ ব্যাপারে রাজিবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরো বলেন, ‘আগের কমিটি, অভিভাবকমহলসহ এলাকাবাসীর সবার ধারণা স্কুলে ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের মাধ্যমে গঠন করা হবে। কিন্তু নির্বাচন না করে কিভাবে প্রধান শিক্ষক বোর্ড থেকে কমিটি নিয়ে আসলেন তা আমার জানা নেই।’ 

মেয়েকে স্কুলে চাকরি দেওয়ার জন্য বিয়াইকে সভাপতি করে গোপনে কমিটি পার করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘সব জায়গায় খোঁজ নিয়ে দেখেন কমিটি এ ভাবেই হচ্ছে। মেয়ের যোগ্যতা থাকলে চাকরি হবে।’

উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার ও নিয়োগপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘সব জায়গায় নির্বাচন হয় না। এখানে সিলেকশন হয়েছে।’

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রউফের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আমার জানার বিষয় না। নির্বাচন হয়েছে কি না আমি জানি না।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত চক্রবর্ত্তী বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কমিটি হয়েছে কি না আমি নিজেই জানি না।’

 

ইত্তেফাক/এসজেড