ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, সরকারের উচিত কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দেওয়া। পরিবেশ ঠিক রেখে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে বিশ্বের অনেক দেশে। বাংলাদেশও সেদিকে যেতে পারে। তিনি বলেন, শিল্পোন্নত দেশগুলোর অনেকেই কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র ফিরে যাচ্ছে। বাংলাদেশেরও উচিত দেশে কয়লা অনুসন্ধান ও উত্তোলনে জোর দেওয়া।
গতকাল বৃহস্পতিবার এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত টেকসই উন্নয়নের জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। তিনি বলেন, ইউক্রেন সংকটের কারণে বিশ্ব জুড়েই জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্হা ভেঙে পড়েছে। আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিদ্যুৎ রেশনিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কৃষি ও শিল্পখাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখতেই এ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এজন্য আবাসিক গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধা মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। তিনি জানান, শিল্প ও সেবা খাতে সরকারের আলাদা নজর আছে। বিদ্যুৎ রেশনিংয়ে শিল্প এলাকা বিবেচনায় লোডশেডিংয়ের পরিকল্পনা করা হলেও গৃহস্থালি এলাকায় কিছু শিল্পকারখানা থেকে যায়; যার জন্য এসব কারখানাকে লোডশেডিং পোহাতে হয়। লোডশেডিংয়ের কারণে কোনো কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানোর অনুরোধ করেন তিনি।
এফবিসিসিআই সভাপতি গ্যাসসংকট মোকাবিলায় স্থলের পাশাপাশি, সাগরবক্ষেও অনুসন্ধান পরিচালন, কূপ খননের তাগিদ দেন। এ লক্ষ্যে বাপেক্সকে আরো শক্তিশালী করার আহ্বান জানান তিনি। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এফবিসিসিআইর প্যানেল উপদেষ্টা ও বুয়েটের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন।
তিনি জানান, চাহিদা অনুসারে গ্যাস পাচ্ছে না দেশের শিল্পখাত। এতে শিল্পের স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের গ্যাসের ওপর একক নির্ভরতা দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে ফেলছে বলে তিনি মনে করেন। ক্রান্তিকালীন সংকট মোকাবিলায় একটি জরুরি তহবিল গঠনের দাবি জানান এফবিসিসিআইর পরিচালক ও বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ভোলার গ্যাসক্ষেত্র থেকে ১৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে বলে জানান বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী। তিনি আরো জানান, ২০২৫ সালে আরো ৬১ কোটি ৮০ লাখ ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এজন্য দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা ও পার্বত্য চট্টগ্রামে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে পাঁচটি অনুসন্ধান কূপ খননের পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।