স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, আন্তঃপার্লামেন্ট যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে সংসদ সদস্যগণ ইতিবাচক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে।
তিনি লন্ডনস্থ সেন্ট জেমস কোর্ট হোটেলে কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এসোসিয়েশনের (সিপিএ) সেক্রেটারি জেনারেল মি. স্টিফেন টুইগ-এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন ।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) এ সাক্ষাৎকালে তাঁরা গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, লিঙ্গ সমতা নিশ্চিতকরণ, জলবায়ু পরিবর্তন, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের পঞ্চাশ বছর পূর্তিসহ সিপিএ-এর কার্যক্রম ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
স্পিকার বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ জলবায়ু পরিবর্তন, লিঙ্গ সমতা নিশ্চিতকরণ, দারিদ্র্য বিমোচনসহ গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণে সিপিএ এর সাথে আরও জোরালো কার্যক্রম গ্রহণ করতে চায়। এসব ইস্যুতে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সদস্যগণের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধিকরণে কাজ করে যাচ্ছে।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সিপিএ-এর সাথে বাংলাদেশের দীর্ঘ অংশীদারিত্ব রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সাল থেকেই বাংলাদেশ সিপিএ-এর সদস্যভুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ আগামী বছর পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে সিপিএ-এর সাথে যৌথভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে, যেখানে সিপিএভুক্ত পার্লামেন্টসমূহের স্পিকার ও সংসদসদস্যগণকে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে উল্লেখ করেন স্পিকার।
শিরীন শারমিন বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ)-এর বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে যে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন তা অনুসরণযোগ্য। সরকারি পর্যায়ে বাংলাদেশের এসব অর্জন থেকে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো দিকনির্দেশনা পেতে পারে। এক্ষেত্রে আন্তঃপার্লামেন্ট যোগাযোগ বৃদ্ধিকরণের মাধ্যমে সংসদ সদস্যগণ ইতিবাচক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে।
সংসদ সদস্যগণকে সোশাল মিডিয়ার ব্যাপক প্রসারে সচেতন হওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, জনগণের মাঝে সংযোগ বাড়লেও এর নেতিবাচক দিকও রয়েছে। সোশাল মিডিয়া বিষয়ে সংসদ সদস্যগণের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাথে সিপিএ-এর কাজের বিষয়ে মি. স্টিফেন টুইগ আগ্রহ প্রকাশ করলে স্পিকার সিপিএ-কে সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর আরও জোরালো ভূমিকা নেয়া উচিৎ উল্লেখ করে বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণের জন্য তিনি সেক্রেটারি জেনারেলকে অনুরোধ করেন।
মি. স্টিফেন টুইগ এমডিজি ও তৎপরবর্তী এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশের সফলতার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কাছে সমগ্র বিশ্বের অনেক কিছু শেখার আছে। কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারে। তাই সিপিএ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাথে যৌথভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে আগ্রহী। বিশেষ করে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশ যেভাবে সফল হচ্ছে, সেখান থেকে কমনওয়েলথভুক্ত ছোট ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলো অভিজ্ঞতা গ্রহণ করতে পারে। এসময় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের পঞ্চাশ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানমালায় সিপিএ-এর সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।
বৈঠককালে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম ও যুগ্ম-সচিব এম এ কামাল বিল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।