শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সচ্ছলের ঘরে ১০ টাকা কেজি চাল, বাদ পড়লো অসহায়রা

আপডেট : ০৯ আগস্ট ২০২২, ১৩:৪২

ঠাকুরগাঁওয়ে অনেক সচ্ছল পরিবার সরকারের দেওয়া ১০ টাকা কেজির চাল পাচ্ছে বলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। আর তালিকা থেকে বাদ পরেছে অনেক অসচ্ছল ও অসহায় পরিবার। এমন অভিযোগ করেছেন ইউনিয়নের বাদ পড়া অসহায়রা।

মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নে দেখা গেছে, সরকারের খাদ্য কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজি চালের আগের কার্ডধারী ২০০ জনের বেশি সুবিধাভোগীর নাম বাদ দিয়েছেন চেয়ারম্যান। 

এ বিষয়ে দলবদ্ধভাবে অভিযোগ করেছেন চাতাল শ্রমিক শহিদুল ইসলাম, মজুর শাহেদ আলী, মামুন, বাসুদেবসহ অনেকে। এ ছাড়াও, অভিযোগ রয়েছে প্রতিবন্ধী সুমনের পরিবারেরও। 

চাতাল শ্রমিক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘৬ মাসের বেশি সময় ধরে ১০ টাকা কেজি চালের কার্ডের মাধ্যমে চাল কিনে থাকি। এবারে নতুন তালিকা করেছে আমার নাম বাদ দিয়েছে। বলেছে আর চাল দিবে না। কার্ডটাও নিয়ে রেখে দিয়েছে। রোদে পুরে চাতালে কাজ করে ৪০০ টাকা পাই। আবার প্রতিদিন কাজ হয় না। আমাকে যদি বিত্তবান বলে চেয়ারম্যান তাহলে আমার কিছু করার নাই।’

মজুর শাহেদ আলী বলেন, ‘এর আগেও আমাকেসহ অনেক গরীব মানুষের নাম বাদ দিয়েছিল। তখন আমরা চেয়ারম্যানের প্রতি চাপ সৃষ্টি করে নামগুলো বহাল রেখেছিলাম। কযেকমাস বাদে আবারও নাম বাদ দিয়েছে। আমরা গরীব মানুষ। প্রতিমাসে অন্তত চালে সাশ্রয়ী হতো। এখন আর সেটাও পাবো না। এটা আমাদের প্রতি চেয়ারম্যানের  জুলুম।’ 

প্রতিবন্ধী সুমনের পরিবারের লোকজন বলেন, আমাদের কার্ড ছিল। ১০ টাকা কেজি চাল সংগ্রহ করতাম। কিন্তু আমাদের প্রতিবন্ধী সুমনের কার্ডটাও রেখে দিয়ে নাম বাতিল করা হয়েছে। শুনেছি আমরা আর চাল পাবো না। 

চেয়ারম্যানের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। নাম না প্রকাশের শর্তে এক রাইসমিল ব্যবসায়ী বলেন, আমার চাতালে কাজ করেন অনেক গরীব মানুষ। প্রতিদিন কাজও থাকে না। তাদের বিত্তবান বলে কার্ড বাতিল করে তার নির্বাচনী কর্মীদের তালিকাভুক্ত করেছেন তিনি। এ ছাড়াও, দলীয় নেতাকর্মীদের কার্ড করে দিয়েছেন। 

অভিযুক্ত জামালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘নির্দেশনা মোতাবেক যারা অসচ্ছল, যারা ভিজিডি সুবিধা পায় এবং যারা মারা গেছেন তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে ভুল করে কিছু বিত্তবান এই তালিকায় আসতে পারে। এটা দ্রুতই সমাধান করতে হবে।’

এবিষয়ে ইউএনও আবু তাহের মো. শাসুজ্জামান বলেন, ‘আমরা চাই সরকারের সুবিধায় অসচ্ছল ব্যক্তিরা যেন অগ্রাধিকার পান। ভোক্তাদের নতুন তালিকা হালনাগাদের সময় কোনো অসচ্ছল ব্যক্তি বাদ পড়ে গেলে বা সচ্ছল পরিবারের নাম যোগ হলে তা সংশোধনের সুযোগ রয়েছে।’

ইত্তেফাক/মাহি