দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জা ও সুদৃশ্য অপরূপ ইন্টেরিয়র ডিজাইন। অসামান্য কারুকাজ। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরায় ছোট পরিসরে তৈরি করা হয়েছে ফুলবাগান। রয়েছে পাঠাগারও। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে গড়া শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর দুই দিনের জন্য মিরসরাইয়ের চিনকি আস্তানা রেল স্টেশনে আসে। শিশু, কিশোর থেকে শুরু সব বয়সি লোকজন পরিদর্শন করেন। জানার সুযোগ পাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের অনেক অজানা ইতিহাস সম্পর্কে।
গত বুধবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য ভ্রাম্যমাণ জাদুঘরটি উন্মুক্ত ছিল। জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মাসে ১ আগস্ট থেকে যাত্রা শুরু হয়েছে এই জাদুঘরের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভ্রাম্যমাণ এই জাদুঘরে প্রবেশ করেই দর্শনার্থীরা পরিচিত হবেন জাতির পিতার শৈশবের দিনগুলোর সঙ্গে। পর্যায়ক্রমে বঙ্গবন্ধুর ছাত্রজীবন, বেড়ে ওঠা, মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের মাধ্যমে গণমানুষের প্রাণের নেতা হয়ে ওঠা এবং ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক হিসেবে তার অবদান তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অবর্ণনীয় নির্যাতনের চিত্র, মিথ্যা মামলা ও কারাভোগের করুণ দলিল। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, বহু কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা, যুদ্ধবিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ জানা যাবে। কোচের এক প্রান্তে একটি বড় এলইডিতে জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণসহ গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ, থিম সং এবং বঙ্গবন্ধুর ওপর রচিত অন্যান্য গান প্রচার করা হচ্ছে।
জাদুঘর পরিদর্শনে আসেন চিনকী আস্তানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী। তাদেরই একজন ৫ম শ্রেণীর ছাত্র মো. ইশতিয়াক আলম রবিন বলেন, আমাদের বাড়ির পাশে এভাবে বঙ্গবন্ধুর ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর দেখতে পাব কল্পনাও করিনি। জাদুঘর ঘুরে ঘুরে অনেক কিছু দেখেছি। অনেক অজানা তথ্য জেনেছি। আমার খুব ভালো লেগেছে।
চিনকী আস্তানা রেল স্টেশন মাস্টার মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন তথ্য চিত্রে দৃষ্টিনন্দন জাদুঘরটি এখানকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বুধবার সকাল থেকে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীসহ সব বয়সি মানুষ জাদুঘর পরিদর্শন করেছেন। নতুন প্রজন্ম এই জাদুঘরে এসে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জেনেছে।