ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চার বছরের বদলে ৩ বছর করার ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, ডিপ্লোমা কোর্স চার বছর হওয়া উচিত নয়। যে কোর্স ৩ বছরে পড়ানো সম্ভব সেটি টেনে ৪ বছরে নেওয়া উচিত নয়।
শনিবার (১৩ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনাতায়নে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শিশু কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাব ও শেখ রাসেল শিশু সংসদ এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যারা প্রতিষ্ঠান চালান বিশেষ করে কারিগরি প্রতিষ্ঠান চালান তাদের জন্য হয়তো ডিপ্লোমা কোর্স চার বছর হলে সুবিধা হয়। কিন্তু যে পড়া তিন বছরে পড়ানো সম্ভব তা টেনে চার বছরে নিলে বাবা-মায়ের বাড়তি খরচ হয়। বিশ্বের অনেক জায়গায় যেখানে শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক উন্নত সেখানে অনার্স কোর্সও আছে তিন বছরের।’
দীপু মনি বলেন, ‘সারাবিশ্বে কারিগরি শিক্ষায় যে মান অর্জিত হয়, আমরা আমাদের কারিগরি শিক্ষায় সে মান নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। সে মান নিয়ে আসার পাশাপাশি এ খাতকে আরও প্রশস্ত করা দরকার। তাই আমরা মনে করি, ডিপ্লোমা কোর্স তিন বছর হওয়া উচিত।
ডিপ্লোমা কোর্স তিন বছর করার শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের উদ্যোক্তাদের সংগঠন টেকনিক্যাল এডুকেশন কনসোর্টিয়াম অব বাংলাদেশ (টেকবিডি)। গতকাল এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি প্রকৌশলী আবদুল আজিজ ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী কারিগরি শিক্ষার্থী ও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের মনের কথারই প্রতিধ্বনি করেছেন। ২০০০ সালে একটি স্বার্থান্বেষী মহল তাদের চাকরি জীবনের পদোন্নতিসহ ব্যক্তিগত স্বার্থ সামনে রেখে ডিপ্লোমা কোর্সকে ৪ বছর করার আন্দোলন করেছেন। তাদের স্বার্থ আদায়ে তখন সরকারকে এবং শিক্ষার্থীদের ভুল বোঝানো হয়েছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীরাও জানতো না যে, কোনো বোর্ড (কারিগরি শিক্ষা বোর্ড) স্নাতক ডিগ্রি দিতে পারে না।’
টেকবিডি নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ‘পৃথিবীর কোথাও বর্তমানে ৪ বছরের ডিপ্লোমা কোর্স নেই। বর্তমানে ৪ বছরের ডিপ্লোমা লেখাপড়া করে একজন শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিকের সমান মর্যাদা পাচ্ছে। আবার কেউ যদি স্নাতক হতে চায় তাহলে তাকে আরও ৪ বছর পড়তে হচ্ছে। অন্যদিকে প্রকৌশল শিক্ষায় আগ্রহীরা দেখছে যে, এর পরিবর্তে সাধারণ শিক্ষায় গেলে উচ্চ মাধ্যমিকসহ ৬ বছরে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যায়। পাশাপাশি অর্থের সাশ্রয়ও হচ্ছে। তাই বর্তমানে চার বছরের ডিপ্লোমা কোর্স পরিচালিত হওয়ায় শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা উৎসাহ হারাচ্ছেন।