ঈশ্বরদীতে খামারে ডিমের দাম কমলেও পাইকারি ও খুচরা বাজারে প্রভাব পড়েনি। হঠাৎ করেই ৫-৬ দিন আগে খামারে ডিমের দাম বেড়ে যায়। এসময় খামারিরা পাইকারদের কাছে প্রতিটি ডিম ১১.২০ টাকা দরে বিক্রি করে। এই পরিস্থিতিতে পাইকাররা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতিটি ১৩.৮০ টাকা এবং খুচরা ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের নিকট হতে প্রতিটি ডিমের দাম ১৫ টাকা আদায় করে। গত তিন দিন ধরে খামারে ডিমের দাম কমে মঙ্গলবার ৯.৮০ টাকা হয়েছে। কিন্তু পাইকাররা ১৩.৫০ টাকায় এবং খুচরা বিক্রেতারা এখনও ১৫ টাকা করেই এখনও ডিম বিক্রি করছে। মধ্যস্বত্বভোগী পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও ভোক্তা ও ডিম উৎপাদনকারী খামারিদের ঠকতে হচ্ছে। ঈশ্বরদীর আরআরপি এবং কুষ্টিয়ার আফিল কোম্পানী ডিম উৎপাদনকারী কয়েক লাখ লেয়ার মুরগী বিক্রি করে দেওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বলে খামারিরা জানিয়েছেন। মঙ্গলবার (১৬ আগষ্ট) হতে মুরগীর বাচ্চা ও ফিডের দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। দাম বাড়ানো হলে প্রতিটি ডিমের দাম ২০ টাকায় ঠেকবে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
জাতীয় পদকপ্রাপ্ত ঈশ্বরদীর খামারি আকমল হোসেন জানান, মাত্র ৫-৬ দিন বেশী দামে অর্থাৎ ১১.২০ টাকা দরে প্রতিটি ডিম বিক্রি করেছি। তিনদিন ধরে ডিমের দাম পড়ে যাচ্ছে। আজ মঙ্গলবার প্রতি ডিম ৯.৮০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। প্রতিটি ডিমে খরচ পড়ে ৯ টাকা। আরআরপি ও আফিল হ্যাচারির লেয়ার বিক্রি করে দেওয়ায় ডিমের দাম হঠাৎ করেই বেড়ে যায়। দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের তেমন একটা লাভ হয়নি, লাভ করেছে ব্যবসায়ীরা। মুরগীর বাচ্চা ও ফিডের দাম অনেক বাড়ানো হচ্ছে বলে শুনেছি। এতে প্রতিটি ডিমের দাম ২০ টাকা হবে। ঈশ্বরদীতে ২৫০-২৬০টির মতো খামার ছিলো। এখন রয়েছে প্রায় ১০০টি। ফিডের দামের সাথে তাল মিলিয়ে ডিমের দাম না বাড়লে আরও খামার বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
আরআরপি এ্যগ্রো ফার্মের ব্যবস্থাপনা অংশীদার মনসুর আলম জানান, আগেই ফিডের দাম বেড়েছে। তবে আরেক দফা বাড়বে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এক কেজি ভূট্টার দাম ১৬-১৭ টাকা থেকে এখন ৩২-৩৩ টাকা হয়েছে। ডলারের দাম ১১৪-১১৫ টাকা হওয়ায় বিদেশ হতে আমদানিকৃত ফিড উৎপাদনের অন্যান্য কাঁচামালের ব্যয় বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে খামারিরা ডিমের দাম না বাড়ালে অনেক খামার বন্ধ হয়ে যাবে। তবে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে মাছ, মাংস ও ডিমের দাম এখনও সহনীয় বলে জানান তিনি।