জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির মেলা হয়েছে। শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে মেলার উদ্বোধন করেন ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবির। মেলায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার সিভি বিভিন্ন স্টলে জমা পড়ে।
মেলার উদ্বোধনী বক্তব্যে মোহাম্মদ আলমগীর কবির বলেন, ‘করোনার পর সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশের কর্মক্ষেত্রেও বড় বাধা এসেছে। অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। শিক্ষাজীবন শেষ করতেও অনেকের লম্বা সময় লাগছে। এ দিকে চাকরিদাতারা বলছেন, তাঁরা যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছেন না। এই মেলা চাকরিদাতা ও চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে সংযোগ ঘটাতে সক্ষম হবে।’
প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক জাফর সাদিক বলেন, ‘পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের শিক্ষিত তরুণ বেকার ১০ দশমিক ৭ শতাংশ। এই বিশালসংখ্যক বেকার তরুণ নিজেদের যোগ্যতা ও দুর্বলতার ব্যাপারগুলো সম্পর্কে অবগত নন। ফলে নিজেদের যোগ্যতার উন্নয়ন ও কর্মক্ষেত্রের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারছেন না। মেলায় চাকরি পাওয়ার পাশাপাশি চাকরির নানা প্রাসঙ্গিক বিষয়েও চাকরিপ্রত্যাশীরা জানতে পারবেন।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার সভাপতি হাসান মাহমুদ। এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মনির উদ্দিন শিকদার, প্রথম আলোর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মাইদুল ইসলাম ও এক্সিলেন্স বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বেনজির আবরার। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের করিডরে বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের বুথ ও স্টল পরিদর্শন করেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।
আয়োজকেরা জানান, মেলায় ইউনিলিভার বাংলাদেশ, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, পারটেক্স স্টার গ্রুপ, বিকাশ লিমিটেড, প্রাণ-আরএফএল, আকিজ গ্রুপসহ ৩০টি করপোরেট প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। মেলার সিভি বুথে সিভি যাচাই, সংশোধন ও সিভি সম্পর্কে অভিজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার সুযোগ থাকবে। মক ভাইভা দিয়ে ভাইভা ভীতি কাটাতে পারবেন চাকরিপ্রার্থীরা।
বেলা ৩টা থেকে জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনারকক্ষে ক্যারিয়ার সামিট শুরু হয়। ক্যারিয়ার সামিট অংশে কি-নোট স্পিকার হিসেবে বক্তব্য দেন আকিজ ভেঞ্চারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সৈয়দ আলমগীর। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেবেন বিকাশ লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার আবু ইউসুফ মোহাম্মদ রাশেদুল আমিন, সদাগরডটকমের উদ্যোক্তা আরিফ চৌধুরী এবং স্টার সিনেপ্লেক্সের এইচআর প্রধান লায়লা নাজনীনসহ অনেকেই।
চাকরি মেলার প্রশংসা করে তরুণদের উদ্দেশে আরিফ চৌধুরী বলেন, ‘উদ্যোক্তা হতে গেলে প্রতিটি পদক্ষেপ খুব বুঝেশুনে দিতে হবে। অনেক অফার আসবে, তার মধ্যে বুঝে নিতে হবে কোনটা আপনার সঙ্গে যায়। কখনো ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না।’
চাকরি প্রত্যাশীদের উদ্দেশে লায়লা নাজনীন বলেন, ‘চাকরি নেওয়ার আগে পছন্দটা আগে ঠিক করতে হবে। তারপর শুরু করতে হবে। চাকরি জীবনের শুরুতে সেলারি মেটার করে না, অভিজ্ঞতা হয়ে গেলে সব প্রত্যাশাই পূরণ হয়।’
এক্সিলেন্স বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বেনজির আবরার বলেন, ‘চাকরি মেলা মূলত সুযোগ সৃষ্টির একটি প্রচেষ্টা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই চাকরি মেলায় আমরা আশাবাদী দেশের চাকরিপ্রার্থীরা বেশ আশার সঞ্চারণ পাবে।’
এসময় সৈয়দ আলমগীর বলেন, ‘চাকরির প্রতিযোগিতায় যোগ্যতায় এগিয়ে থাকার বিকল্প নেই। সাহস ও উদ্যোম থাকতে হবে, পরিশ্রম করার মানসিকতা থাকা আবশ্যক। সবসময় রেডি থাকতে হবে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার।
প্রসঙ্গত, মেলার আয়োজন করে প্রথম আলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা। এতে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। পুরো অনুষ্ঠান সমন্বয়ক ছিলেন প্রথম আলো বন্ধুসভার জাবি সভাপতি হাসান মাহমুদ সম্রাট।
এই আয়োজনের ইভেন্ট পার্টনার হিসেবে ছিল এক্সিলেন্স বাংলাদেশ, গোল্ড স্পন্সর হিসেবে ছিল পিএফইসি গ্লোবাল, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ পার্টনার প্রাণ ফ্রুটো ও অল্টাইম, ড্রিংকিং পার্টনার মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, স্ন্যাকস পার্টনার ইফাদ গ্রুপ, গুডিস পার্টনার অক্টোর, ফটোগ্রাফি পার্টনার রিলস বাই পূর্ণ, ক্লাব পার্টনার জেইউসিসি, রেডিও পার্টনার এবিসি রেডিও ৮৯.২ এফএম, অনলাইন নিউজ পার্টনার জাগো নিউজ ২৪.কম, ম্যাগাজিন পার্টনার চলতি ঘটনা।