দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, ষড়যন্ত্রকারীরা থেমে নেই। এই হত্যাকারী চক্র দেশকে পিছিয়ে নিতে আবারও ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এ সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত প্রতিহত করে জননেত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা ও ভিশন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাব।
শনিবার (২৭ আগস্ট) সকালে যবিপ্রবি ক্যাম্পাসে আয়োজিত ফ্রি হেল্থ ক্যাম্প ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণের দিনব্যাপী কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এসব কথা বলেন। কর্মসূচির শুরুতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী যবিপ্রবির শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপরে তিনি ডা. এম আর খান মেডিকেল সেন্টারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাজের অনগ্রসর ও পিছিয়ে পড়া ৭০০ শতাধিক মানুষকে চিকিৎসা সেবাপ্রদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এই হেলথ ক্যাম্পে বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ প্রায় ৪৫ জন ডাক্তার চিকিৎসা সেবা দেন। ফ্রি হেল্থ ক্যাম্পে স্কয়ার, বেক্সিমকো, ইনসেপ্টা, রেনাটা. অপসোনিন, এসিআই, একমি, রেডিয়েন্ট, ইউনিহেল্থ ইউনিমেড ও হেল্থ কেয়ার কোম্পানি রোগীদের জন্য বিনামূল্যে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ সরবরাহ করে।
সকাল সাড়ে ১০টায় যবিপ্রবির শেখ রাসেল জিমনেসিয়ামে ৫০০ শতাধিক পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন। আলোচনা সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও স্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করবে তাদের সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করতে হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে পুনরায় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে। তিনি যেন তার পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারেন, এ জন্য আমরা তাঁর পাশে থাকব।
সভাপতির বক্তব্যে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে কমিউনিটি সার্ভিস দিয়ে থাকে। সেই আলোকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে আমরা ফ্রি হেলথ ক্যাম্প ও সমাজের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে খাদ্য সহায়তার কর্মসূচি পালন করছি। এই কাজগুলো আমরা ২০১৮ সাল থেকে শুরু করেছি। আশা করি, আমার পরবর্তী যিনি উত্তরসুরী আসবেন তিনিও এটি চালু রাখবেন। আমার শিক্ষার্থীরাও এটি চালিয়ে যাবেন, সহায়তা করবেন।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন যবিপ্রবির ফ্রি হেল্থ ক্যাম্প কমিটির আহ্বায়ক এবং ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. এম. এ. রশীদ, যবিপ্রবির ডিনস কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিব, যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট এ বি এম আহসানুল হক, জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. মিজানুর রহমান, যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. সেলিনা আক্তার, কর্মচারী সমিতির সভাপতি মো. শওকত ইসলাম সবুজ, যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সোহেল রানা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন যবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব। ধন্যবাদ দেন ফ্রি হেল্থ কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান ও পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার। এ ছাড়া যবিপ্রবির ডিন অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ, অধ্যাপক ড. সাইবুর রহমান মোল্যা, ড. মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, ড. মো. তানভীর ইসলাম, ড. মো. হাফিজ উদ্দিন, ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান, অধ্যাপক ড. শেখ মিজনুর রহমান, যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আশরাফুজ্জামান জাহিদ, যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তানভীর ফয়সালসহ বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, দপ্তর প্রধানসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যবিপ্রবির শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নাসিম রেজা।
খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোঃ এনামুর রহমান যবিপ্রবির টিএসসি ভবনের (প্রথমাংশ) উদ্বোধন করেন এবং একটি কৃষ্ণচূড়ার চারা রোপণ করেন।