মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

অর্থবছরের শুরুতে রাজস্ব আদায়ে ধীরগতি

আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২২, ০৬:০২

অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজস্ব আহরণে ধীর গতি দিয়ে নতুন অর্থবছর শুরু করল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে। তবে ঘাটতি থাকলেও জুলাইয়ে সার্বিকভাবে রাজস্ব আদায় বেড়েছে বা প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ শতাংশ। 

এনবিআরের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও শুল্ক খাতে সব মিলিয়ে এ মাসে আদায় হয়েছে ১৭ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা। সে হিসাবে মাস ভিত্তিতে রাজস্ব আহরণে পিছিয়ে ২ হাজার ৮২৬ কোটি টাকা। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে এনবিআরকে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের বিশাল লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। এটা গত অর্থবছরের চেয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ৩ লাখ ২ হাজার কোটি টাকার শুল্ক-কর আদায় করে এনবিআর। লক্ষ্য অর্জনে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে প্রায় ২৩ শতাংশ বাড়াতে হবে। এবার জুলাইয়ে রাজস্ব আদায়ে শুল্ক খাতে আগের বছরের জুলাইয়ের তুলনায় রাজস্ব আদায় বেশ বেড়েছে। মাস ভিত্তিতে শুল্ক খাতে আদায়ে প্রবৃদ্ধি প্রায় ৩৮ শতাংশ। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবে আমদানি পর্যায়ে শুল্ক আদায় বেড়েছে। জুলাইয়ে শুল্ক বাবদ আদায় হয়েছে ৬ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা। এই খাতে লক্ষ্য ছিল ৬ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে বলা যায়। গতবছরের জুলাইয়ের তুলনায় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার মতো বেশি আদায় হয়েছে এই খাত থেকে। অন্যদিকে জুলাইয়ে ভ্যাট আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা থেকে ঘাটতি প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। ৮ হাজার ২১৪ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এ মাসে ভ্যাট আদায় হয়েছে ৬ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা। আয়কর আদায়ে ঘাটতি রয়েছে ৯৩৫ কোটি টাকা। জুলাইয়ে আয়কর ও ভ্রমণ কর আদায় হয়েছে ৪ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা। এই সময়ে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা।এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের সাময়িক হিসাবে এ তথ্য পাওয়া গেছে। 

এ দিকে গত বৃহস্পতিবার শুল্ক ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়ে রাজস্ব পর্যালোচনা সভা করেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। সেগুনবাগিচায় এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা সূত্রে জানা গেছে, রাজস্ব আদায়ে আরও কঠোর হওয়ার জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া করদাতাদের হয়রানি না করে তাদের কাছ থেকে সহজে কর আদায় করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। মাসভিত্তিক রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ ও কর্মকৌশল নির্ধারণ করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে অভ্যন্তরীণ খাত বিশেষ করে এনবিআরের শুল্ক-কর আদায় বাড়ানোর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

ইত্তেফাক/ইআ