ঢাকা নগর পরিবহনের ২২ ও ২৬ নম্বর রুট হিসেবে আরও দুটি নতুন রুট চালু হতে যাচ্ছে ১৩ অক্টোবর থেকে। বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির প্রধান এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ তথ্য জানিয়েছেন।
মঙ্গলাবার (৬ সেপ্টেম্বর) ডিএসসিসির নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ২৪তম সভা শেষে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। মেয়র বলেন, ‘আমাদের বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় নতুন বাস দিয়ে ২২ ও ২৬ নম্বর নতুন রুট চালু হবে ১৩ অক্টোবর। একই সময় ২৩ নম্বর আরও একটি রুট চালু হওয়ার কথা থাকলেও সেই রুটে কাজ বাকি থাকায় সেটি প্রস্তুত করার জন্য ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। আমাদের নতুন এই রুটে সব নতুন বাস দিয়ে সেবা চালু হবে। এছাড়া আমাদের পুরোনো ২১ নম্বর রুটে নতুন নতুন বাস আমরা যুক্ত করবো। বাসের শৃঙ্খলা ফেরাতে ২৫ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চিরুনি অভিযান চলবে।’
২২ নং রুট হলো- ঘাটারচর, ওয়াশপুর, বসিলা, বসিলা সিএনজি স্ট্যান্ড, মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড, টাউন হল, আসাদগেট, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, কাকরাইল, ফকিরাপুল, মতিঝিল, টিকাটুলি, কাজলা, কোনাপাড়া এবং স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত। এছাড়া টিকাটুলি থেকে কাজলা পর্যন্ত ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে বাস চলাচল করবে।
২৬ নম্বর রুট হলো- ঘাটারচর, ওয়াশপুর, বসিলা, বসিলা সিএনজি স্ট্যান্ড, মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড, টাউন হল, আসাদগেট, সোবহানবাগ, কলাবাগান, সায়েন্সল্যাব, নিউ মার্কেট (নীলক্ষেত), আজিমপুর, পলাশী, চাঁনখারপুল, পোস্তগোলা, পাগলা (কদমতলী থানা) পর্যন্ত। এছাড়া এই রুটে চাঁনখারপুল থেকে পোস্তগোলা পর্যন্ত ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে বাস চলাচল করবে।
সভায় মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর আমরা দীর্ঘদিনের জটিলতা নিরসন করে ঢাকা নগর পরিবহনের প্রথম ২১ নম্বর যাত্রাপথ আমরা শুরু করি। আপনারা জেনে খুশি হবেন যে, অগাস্ট মাস পর্যন্ত এই যাত্রাপথে আমরা ২৪ লক্ষাধিক ঊর্ধ্বে ঢাকাবাসীকে যাত্রী সেবা দিতে সক্ষম হয়েছি। এতে ঢাকা নগর পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিআরটিসি এবং বিভিন্ন মালিকরা প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা আয় করতে পেরেছে। এর মাধ্যমে এটি প্রমাণিত যে, আমরা সঠিক পথে এগোচ্ছি। যদিও এখনো অনেক প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতা এবং সমস্যা রয়েছে। আমরা ধাপে ধাপে সেগুলো সমাধান করে এগিয়ে চলছি।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরে গণপরিবহন সেবায় দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত সমস্যা রয়েছে। এই শহরে নগর পরিবহন চালু করাটা সত্যিই অনেক চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ। আমরা দুই মেয়র আন্তরিকতার সঙ্গে চেষ্টা করছি নগর পরিবহনটির সফল বাস্তবায়নের জন্য। পাইলট হিসেবে একটি রুটে চালু করে ইতোমধ্যে আমরা চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করেছি। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নতুন রুটে আমরা কার্যক্রম শুরু করছি। মানসম্মত সেবার কারনে নগর পরিবহন প্রথম রুটে জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে।
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘২২, ২৩ ও ২৬ এই তিনটি রুটে দুইশত নতুন বাস দিয়ে চলবে নগর পরিবহন। বাসগুলোর নির্মাণ কাজ চলছে। সম্পূর্ণ নতুন বাস নির্মাণের জন্য বর্তমান পরিস্থিতিতে একটু সময় লাগছে। ১৩ সেপ্টেম্বর নতুন বাসের গুণগত মান ও বাস নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে যাবো। আধুনিক মানসম্পন্ন ও আরামদায়ক সম্পূর্ণ নতুন বাস দিয়েই নগর পরিবহন চলবে। আশা করছি সবার সহযোগিতায় দ্রুতই স্বপ্নের নগর পরিবহনের মাধ্যমে নগরবাসীকে মানসম্মত সেবা প্রদান করতে পারবো’।
সভায় ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, বিআরটিএ এর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আজমল উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনারের প্রতিনিধিসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।