শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

গায়ে হলুদে আনন্দ করায় গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ  

আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৬:০৪

হাতিয়ায় গায়ে হলুদে আনন্দ করার অভিযোগে জীবনা আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদকে আসামি করে হাতিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে নিহত গৃহবধূর মা পিঞ্জুরা বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

স্থানীয়রা জানান, দুই বছর আগে হরণী ইউনিয়নের দক্ষিণ আদর্শ গ্রামের নাছির উদ্দিনের মেয়ে জীবনার বিয়ে হয় হরণী ইউনিয়নের কাজিরটেক গ্রামের আব্দুর রহিম সদুর ছেলে মো. হোসেনের (২২) সঙ্গে। বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে জগড়া লেগেই আছে। একাধিকবার গ্রাম্য সালিশে মিমাংসা হয়। 

এদিকে, গত ১ সেপ্টেম্বর একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে জীবনাকে বাড়ি নিয়ে যান তার স্বামী। এই ঘটনার ২ ঘণ্টা পর জীবনা আত্মহত্যা করছেন বলে প্রচার করেন মো. হোসেনের পরিবারের সদস্যরা। পরে জীবনার মাসহ পরিবারের সদস্যরা স্বামীর বাড়িতে গিয়ে জীবনার লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।

হরণী ইউনিয়নের কাজিরটেক গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান জানান, বিয়ে বাড়িতে  গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে আনন্দ করাকে কেন্দ্র করে স্বামী হোসেন তার স্ত্রীকে পিটিয়েছে। গ্রামের অনেকে তাকে তা জানিয়েছেন। একই দিন বিকালে শ্বশুর বাড়ির বসত ঘর থেকে জীবনার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

জীবনার মা পিঞ্জুরা বেগম জানান, তাদের বাড়ি থেকে জীবনার শ্বশুর বাড়ি ৫ কিলোমিটার দূরে। ঘটনার দিন দুপুরের পর একজন মোবাইলে তাকে দ্রুত জীবনার শ্বশুর বাড়ি আসতে বলেন। জীবনার ডাইরিয়া হয়েছে বলে জানানো হয় তাকে। তিনি তাদের বাড়ি এসে দেখেন অনেক লোকের জমাট। ঘরের মধ্যে একটি খাটের ওপর জীবনার মৃতদেহ পড়ে আছে। পরনে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে যাওয়ার পোশাক পরিহিত। আগেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন মোর্শেদ বাজার পুলিশ ক্যাম্পের কয়েকজন সদস্য।

পিঞ্জুরা বেগমের অভিযোগ, মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে তিনি মেয়ের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন। কিন্তু পুলিশ তাদের ঘর থেকে বের করে দিয়ে নিজেদের মত করে লাশের সুরতাল প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। প্রতিবেদন তৈরি করার সময় তাদের কাউকে থাকতে দেওয়া হয়নি।  

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন বলেন, ‘গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে মা বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় নিহত গৃহবধূর স্বামীসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

ইত্তেফাক/এইচএম