কক্সবাজারের কটেজ জোনের শিউলি কটেজের টর্চার সেলের ঘটনার মূলহোতা লোকমানসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে গোপন অভিযান চালিয়ে কটেজ জোনের শিউলি কটেজ থেকে তাদের আটক করা হয়।
গ্রেফতারকৃত, কটেজ মালিক লোকমান সরোয়ার (৩৬) মহেশখালীর শাপলাপুর ২ নম্বর ওয়ার্ডের নুর হোসেনের ছেলে। অপরজন তার সহযোগী ও হোটেল-মোটেল জোনের চিহ্নিত দালাল আবদুল গফুর (৩০)।
ধৃতদের মাঝে, লোকমান ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। কটেজ জোনের অপরাধচক্র ও তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতাদের ব্যাপারেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।
তিনি আরও জানান, কটেজ জোনের আশপাশের বেশ কয়েকজনের নাম বলেছে যারা নিয়মিত এসব কটেজ থেকে চাঁদা নিয়ে থাকে। দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক হিসেবে এসব চাঁদা তারা নেয়। পর্যটকদের আবাসিক হোটেল হিসেবে ব্যবহারের আড়ালে মোট ৬টি কটেজে অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করা হয়। এসব কটেজে টার্গেট করে দালালদের মাধ্যমে পর্যটক আনা হয় এবং নারী ও মাদক দিয়ে তাদের ব্ল্যাকমেইল করে সবকিছু কেড়ে নেওয়া হয়। লোকমানের দেওয়া তথ্য মতে অন্যরা হলো- পাহাড়তলীর ইমরান, লাইটহাউজ পাড়ার রমজান, কালু, খোকা, বাহারছড়ার সুমন, আজিজ, মিজান- এরা প্রত্যেকেই সপ্তাহে ১০০০ টাকা করে চাঁদা নেয়।
তিনি আরও জানান, বাহারছড়ার পাগলা রফিক, লাইটহাউজ পাড়ার কালু, মুনসুর, মাহফুজ, খালেক ও জমির, পাহাড়তলীর নাছির প্রত্যেকেই সপ্তাহে ৫০০ টাকা করে চাঁদা নেয় বলে লোকমান স্বীকার করেন।
এছাড়া লাইট হাউজ পাড়ার রাসেল, ফাহিম, কলাতলীর আমান প্রতি সপ্তাহে ৩০০ টাকা করে, মোতালেব ৬০০ টাকা, লাইটহাউজ পাড়ার শুক্কুর সপ্তাহে ১৫০০, নেজাম সপ্তাহে ২০০ টাকা করে চাঁদা নেয় বলে স্বীকার করেছে। তার স্বীকারোক্তি মতে ২০ জনকে তার অনৈতিক আয়ের ভাগ দিতো লোকমান।
প্রাপ্ত তথ্যগুলো যাচাই বাছাই করে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে উল্লেখ করে এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত লোকমান সরোয়ার ও আবদুল গফুরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এ টর্চার সেলের ঘটনায় মামলার পর ইতোপূর্বে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয় ১৩ আগস্ট দিনগত রাত ১১টায়। কক্সবাজার সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে গ্রেফতারকৃতরা হলো, কক্সবাজারের ঈদগাঁওর ইসলামপুর ইউনিয়নের নুরুল আজিমের ছেলে রাশেদুল ইসলাম (২৫) ও একই ইউনিয়নের পূর্ব বামনকাটার আব্দুস সালামের ছেলে মো. সাকিল (২২)। তারা কারান্তরিণ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন, কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশ জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম।