মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ১৪ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

আরও দুই বছর খেলতে চান রিয়াদ

আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:৩১

আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত হয়ে গেছে বাংলাদেশ দল। ১৫ সদস্যের সেই দলে জায়গা হয়নি সাবেক টাইগার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের। বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ পড়ার পর রিয়াদ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছিলো। তবে রিয়াদকে মাঠ থেকে বিদায় দিতে চেয়েছিলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)।

রিয়াদ যেন মাঠ থেকে বিদায় নিতে পারে সেজন্য বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে তাকে খেলার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো। তবে  রিয়াদ দেশের হয়ে আরও দুই বছর খেলতে চান বলেই বিসিবির এমন আমন্ত্রণে সাড়া দেননি বলে জানিয়েছেন বিসিবির এক কর্মকর্তা।  

ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিসিবির ওই কর্মকর্তা জানান, ‘মাহমুদউল্লাহ এই বিষয়ে রাজি হয়নি। সে এখনই বিদায় নিতে চায় না। সে জানিয়েছে, সে আরও দুই বছরের মতো খেলতে চায়। সে জাতীয় দলে তার জায়গা ফিরে পেতে চায়।’

এর আগে তামিম ইকবাল আর মুশফিকুর রহিম টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যে বিষয়টি পছন্দ হয়নি বিসিবির। এশিয়া কাপে খারাপ পারফরম্যান্সের পর রিয়াদ যদি বিশ্বকাপে সুযোগ না পায় সেক্ষেত্রে তিনিও অবসর নিতে পারেন, এমন গুঞ্জন উড়ছিলো বাতাসে। বিসিবি চেয়েছিলো তামিম আর মুশফিকের মতো দেশের ক্রিকেটের এই তারকা ক্রিকেটার যেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবসরের ঘোষণা না দিয়ে মাঠ থেকে সম্মানের সঙ্গে অবসর নেন। 

এর আগে বিসিবি সভাপতি পাপনও গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ‘আমরা যদি ওকে (মাহমুদউল্লাহ) দলে জায়গা না দিতে পারি, ওকে যদি অবসর নিতেই হয়, তাহলে তাকে ন্যূনতম সম্মানটা তো দেওয়া উচিত। মাঠ থেকে অবসরের সুযোগ দেয়া উচিত। কারণ তার অবদান খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। সে বহু ম্যাচ জিতিয়েছে আমাদের।’

বিশ্বকাপের দলে জায়গা আর পাওয়া হয়নি রিয়াদের। তখনই অবসরের বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা করে বিসিবি। সে যেন মাঠ থেকে অবসর নিতে পারে, সেজন্য বিশ্বকাপের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে খেলার জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু রিয়াদ তাতে অস্বীকৃতি জানান। বরং ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে আবারও নিজেকে প্রমাণ করে আরও দুই বছর খেলতে চান দেশের জার্সি গায়ে।

রিয়াদের সাম্প্রতিক ফর্মহীনতাক আর বয়স বিবেচনাতেই তাকে আসন্ন বিশ্বকাপ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে নিজেদের ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে নতুন করে শুরু করতে চায় বাংলাদেশ। এজন্য এশিয়া কাপের আগে দ্রুত সিদ্ধান্তে নিয়োগ দেয়া হয়েছে টেকনিক্যাল কনসাল্ট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরামকে। বিশ্বকাপের দলে কারা থাকছেন বা না থাকছেন, কাদের নিয়ে বিশ্বকাপের পরিকল্পনা সাজানো হবে সেসবই ঠিক করেছেন শ্রীরাম। নির্বাচকদের সঙ্গে আলোচনা করে তার পরামর্শেই বাদ দেওয়া হয়েছে রিয়াদকে।  

শুধু আসন্ন বিশ্বকাপ নয়, ভবিষ্যত পরিকল্পনার জন্যই রিয়াদকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রীরাম। পারফরম্যান্স বা পরিসংখ্যান নয়, টাইগারদের নতুন এই টেকনিক্যাল কনসাল্ট্যান্ট গুরুত্ব দিয়েছেন ম্যাচের মধ্যে ক্রিকেটারদের ইমপ্যাক্টকে। এ কারণে রিয়াদের পরিবর্তে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াডে রিয়াদের পরিবর্তে অগ্রাধিকার পেয়েছে ইয়াসির আলী রাব্বি। 

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দল ঘোষণার পর সনবাদ সম্মেলনে আসেন শ্রীরাম। রিয়াদকে বাদ দেওয়াটা কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল বলে জানিয়ে শ্রীরাম বলেন, ‘মাহমুদউল্লাহকে বাদ দেওয়ার আলাপটা সহজ ছিল না। সে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি টি-টোয়েন্টি খেলেছে। ওর জন্য আমার সর্বোচ্চ সম্মান রইল। ওর বিষয়ে আলাপের সময় আমাকে খারাপ মানুষ হতে হয়েছে।’

রাব্বীকে দলে নেওয়ার প্রসঙ্গে টাইগারদের এই টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট বলেন, ‘আমার মনে হয় রাব্বি খুব সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলে যে পাওয়ার হিটারের ঘাটতি ছিল সেটা তার আছে। সে এমন একজন যে বল সীমানা ছাড়া করতে পারে, বাউন্ডারি হাঁকাতে পারে।’

ইত্তেফাক/এসএস