ক্ষতিপূরণ প্রদান ও দোষীদের গ্রেফতারে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাসে রাঙ্গামাটি শহরের অটোরিকশা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে জেলা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন।
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় শহরের শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে এক বিক্ষোভ মিছিল করে সেখান থেকে এই ঘোষণা দেন সংগঠনের নেতারা। এসময় শিল্পকলা একাডেমির সামনের প্রধান সড়কে ব্যারিকেট দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় সিএনজি চালকরা। সড়কজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
এদিকে, বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে রোববার দুপুরে জরুরি সভা করে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, পুলিশ সুপার মীর মোদ্দাছ্ছের হোসেন, রাঙ্গামাটি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, রাঙ্গামাটি সিএনজি অটোরিকশাচালক সমিতির সভাপতি পরেশ মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান বাবুসহ অন্য কর্মকর্তারা।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে রাঙ্গামাটি-আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেওয়া এবং শনিবার রাতে সিএনজি চালকের উপর হামলা ও সিএনজি ভাঙচুরের প্রতিবাদে রোববার সকাল থেকে রাঙ্গামাটি শহরে অটোরিকশা চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার রাতে তাৎক্ষণিক সমিতির সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোববার সকাল থেকে রাঙ্গামাটি শহরে অটোরিকশা চলাচল বন্ধের মাইকিং করে শহরবাসীকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে, সকাল থেকে রাঙ্গামাটি জেলায় শহরে একমাত্র যাত্রী পরিবহন সংস্থা সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতির সিএনজি চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে রাঙ্গামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকরা। হঠাৎ সকাল থেকে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল বন্ধ থাকায় এবং শহরে বিকল্প কোনো যানবাহন না থাকায় স্কুল কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রী, অফিসগামী চাকরিজীবীরা পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা গেছে। তবে এসএসসি পরীক্ষার্থী, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও জরুরি সেবায় সিএনজি ধর্মঘটের আওতামুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছে সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতি।
বিক্ষোভ মিছিলে রাঙ্গামাটি সিএনজি অটোরিকশাচালক সমিতির সভাপতি পরেশ মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান বাবু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য অঞ্চলের আঞ্চলিক সংগঠনগুলো রাঙ্গামাটিতে চলাচলরত প্রতিটি সিএনজি প্রতি চাঁদা দাবি করে আসছে। সেই সূত্র ধরে, গত ৫ সেপ্টেম্বর ৪টি সিএনজি অপহরণ করে সন্ত্রাসীরা। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহযোগিতায় তা উদ্ধার করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ সেপ্টেম্বর কাপ্তাই রাবার বাগান এলাকায় একটি সিএনজি অটোরিকশা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এছাড়া শনিবার রাত ১০টায় একটি সিএনজি ড্রাইভারকে মারধর করে সিএনজি ভাঙচুর করে। পার্বত্য অঞ্চলের আঞ্চলিক সংগঠনের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও চালকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হলে পরবর্তী সময়ে আবারও বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন বলে হুশিয়ারী দেন নেতারা।