দীর্ঘ ২৭ দিন পর খুলনা থেকে নিখোঁজ গৃহবধূ রহিমা বেগমকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত পৌঁনে ১১ টার দিকে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার বোয়ালমারী ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের জনৈক আব্দুল কুদ্দুসের বাড়ি থেকে বোয়ালমারী থানা পুলিশের সহযোগিতায় খুলনা মহানগরীর দৌলতপুর থানা পুলিশের একটি টিম তাকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর তাকে নিয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে দৌলতপুর থানা পুলিশ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল ওয়াব জানান, খুলনার দৌলতপুর থানা পুলিশের একটি টিম বোয়ালমারী থানায় এসে রহিমা বেগমকে উদ্ধারের জন্য সহযোগিতা চায়। রাত পৌঁনে ১১টার দিকে বোয়ালমারী উপজেলার বোয়ালমারী ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের বাড়ি থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা হয়। তিনি সুস্থ ও ভালো আছেন।
ওসি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রহিমা বেগম জানিয়েছেন, তিনি নিজেই আত্মগোপন করেছিলেন। তবে কি কারণে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছুই জানা যায়নি। এ বিষয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উদ্ধারের পর তাকে নিয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে দৌলতপুর থানা পুলিশ। এ ব্যাপারে দৌলতপুর থানার ওসিকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এদিকে, রহিমা বেগমকে উদ্ধারের ব্যাপারে মরিয়ম মান্নান ফেসবুকে লিখেছেন, "খুলনার পুলিশ সুপার কল দিয়ে জানালেন আমার ছোট বোনকে আমার মা'কে পাওয়া গিয়েছে। আমার থেকে খুশি এই মুহুর্তে কেউ নেই। আমি এই মুহুর্তে খুলনা যাচ্ছি। ধন্যবাদ সকলকে।"
এর আগে গত শুক্রবার সকালে রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানায় উদ্ধার হওয়া এক নারীর মৃতদেহের সালোয়ার দেখে তার মায়ের লাশ বলে সনাক্ত করে। তবে, পুলিশ ডিএনএ টেস্ট না করে সেটি কার লাশ তা নিশ্চিতভাবে জানাতে পারেনি।
গত ২৭ আগস্ট রাত আনুমানিক ১০টার দিকে খুলনা মহানগরীর মহেশ্বরপাশার উত্তর বণিকপাড়ার নিজ বাসা থেকে টিউবওয়েলে পানি আনতে নিয়ে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। এরপর আর ঘরে ফেরেননি তিনি। স্বামী ও ভাড়াটিয়ারা নলকূপের পাশে ঝোপঝাড়ে তার ব্যবহৃত ওড়না, স্যান্ডেল ও বালতি দেখতে পান। সেই রাতে মাকে খুঁজতে আত্মীয়-স্বজন, আশপাশসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেন সন্তানরা।
রহিমার ৬ সন্তান কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কখনো মাইকিং, কখনো আত্মীয়-স্বজনদের দ্বারস্থ হয়েছেন। সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধনের পর মাকে খুঁজে পেতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানায় মামলাও দায়ের করেন।