শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ফুলবাড়ীতে বেগুনের দাম বাড়ায় কৃষকের মুখে হাসি 

আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:৫৭

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে গত দুই সপ্তাহ ধরে বেগুনের দাম বাড়ায় লাভের মুখ দেখছেন বেগুন চাষিরা।  

উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকা গিয়ে দেখা গেছে, চলতি খরিপ-২ মৌসুমে বেগুনের বাম্পার ফলন ও বেগুনের দাম বাড়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। ভাল দাম পাওয়ায় নেই এখন দুশ্চিন্তা। এখন কৃষকরা প্রতিদিন সকাল সকাল ক্ষেতের বেগুন বিক্রি করাসহ বেগুন ক্ষেত পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত হাসি মুখে। এভাবে বেগুন চাষে কৃষকরা লাভবান হলে অন্য চাষিরাও বেগুন চাষে আগ্রহ বাড়বে বলে মনে কৃষকরা। যে সকল চাষির নিজস্ব জমি নেই তারাও অন্যের জমি লিজ নিয়ে বেগুনসহ বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষ কারে স্বচ্ছল ভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে। অঞ্চলের কৃষকরা অধিক লাভের আশায় প্রতি বছরে আগাম বেগুন চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। শুধু বেগুন চাষ নয় পাশাপাশি সারা মৌসুমে বিভিন্ন ধরণের সবজির আগাম চাষ করে বদলে দিয়েছে নিজের ভাগ্যের চাকা। এ সব চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন এ অঞ্চলের শত শত কৃষক পরিবার। গত দুই সপ্তাহ ধরে বেগুন খেতেই বিভিন্ন এলাকার পাইকারদের কাছ থেকে প্রান্তিক চাষিরা মনপ্রতি ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা বাজার দরে বেগুন বিক্রি করছেন। এরকম বাজার দর থাকলে বেগুন খেতে সব ধরণের খরচ মিটিয়ে বিঘা প্রতি ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বেগুন চাষিরা। 

নাওডাঙ্গা  এলাকার বর্গা চাষি সন্তোষ চন্দ্র রায় জানান, তিনি ২৫ বছর বছর ধরে মানুষের জমি বর্গা নিয়ে বেগুনসহ বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষাবাদ করে আসছে। তিনি অন্য সবজির পাশাপাশি দুই বিঘা জমিতে আগাম বেগুন চাষ করেছেন। মনপ্রতি ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা বেগুন বিক্রি করছেন। গত কয়েক সপ্তাহ থেকে এ যাবৎ পর্যন্ত ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা বেগুন বিক্রি করেছেন। বেগুনের দাম এরকম থাকলে দুই বিঘা জমির বেগুন প্রায় ২ লাখ টাকা বিক্রি করা সম্ভব বলে জানান এ চাষি। 

কুরুষা ফেরুষা এলাকার বেগুন চাষি শফিকুল ইসলাম ও পুলিল চন্দ্র রায় জানান, এবছর আবহাওয়া ভাল থাকায় বেগুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। তারা জানান প্রতি বিঘায় বেগুন চাষাবাদ করতে খরচ হয় কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। বেগুন ক্ষেতে রোগ মুক্ত ও আবহাওয়া অনুকূলসহ বেগুনের ভাল দাম থাকলে ১ বিঘায় ৮০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা বিক্রি করা সম্ভব। সেই যাবতীয় খরচ মিটিয়ে বিঘা প্রতি ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় হয়। বেগুনর মন ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা বিক্রি করছেন। এরকম দাম থাকলে আমরা বেগুন চাষি লাভবান হতে পারবো। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. নিলুফা ইয়াছমিন জানান, চাষিদের বেগুন চাষে উদ্বুদ্ধ করা ও বিভিন্ন সহযোগিতা দেওয়ায় এ অঞ্চলের চাষিরা বেগুন চাষে ঝুঁকছেন। এ অঞ্চলের মাটি বেগুন চাষের উপযোগী হওয়ায় চলতি খরিপ-২ মৌসুমে প্রায় ২৫ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ করেছে। অধিকাংশ কৃষক বেগুন বিক্রি করতে শুরু করেছেন। এ বছরও বেগুন চাষিরা অধিক লাভবান হবেন। এ দিকে শীত মৌসুমের জন্য চাষিরা আগাম বেগুনের চারা রোপনসহ ১৫ হেক্টর জমিতে বেগুনের চাষাবাদ করেছেন। 

ইত্তেফাক/এআই