এ যেন এক অবধারিত নিয়তি। আকাশ থেকে বৃষ্টির ফোটা পড়লেই রাজধানীতে নেমে আসে যানজট। রোববার (২ অক্টোবর) সকাল থেকে শরতের গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। আশ্বিনের গরমে এই বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তির হাওয়া মিললেও অস্বস্তিতে ফেলেছে তীব্র যানজট।
রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে কয়েক দিন ধরেই অসহনীয় যানজট। একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় এ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এ পথে চলাচলকারীদের। তার ওপর বৃষ্টি রাজধানীবাসীর ভোগান্তি বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ। এ অবস্থায় সকাল থেকেই স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রোববার (২ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বিমানবন্দর সড়ক প্রায় থামকে ছিল। আব্দুল্লাহপুর থেকে উত্তরা, এয়ারপোর্ট, খিলক্ষেত, বিশ্ব রোড, বনানী, কুড়িল প্রগতি সরণি জুড়েই তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে বনানী, বিশ্বরোড, খিলক্ষেত, কাওলা, এয়ারপোর্ট, উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর পেরিয়ে গেছে যানবাহনের দীর্ঘ সারি।
ট্রাফিক বিভাগের নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, বিমানবন্দর সড়ক বলতে গেলে পুরোটাই কলাপস করেছে। ইনকামিং আউটগোইং কোনোটাই হচ্ছে না। এর কারণ বেহাল সড়ক। তার ওপর বৃষ্টির পানি গর্তে জমে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। তাই যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। যা দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি করছে।
জানা গেছে, বৃষ্টির কারণে সকাল থেকে রাজধানীতে গণপরিবহন সংকট ছিল। ফলে কাজে বের হওয়া মানুষ গণপরিবহন না পেয়ে ছাতা মাথায় রাস্তায় অপেক্ষায় ছিল। রাস্তায় মানুষ দাঁড়িয়ে থাকার কারণেও অন্যান্য যানবাহনে চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। যার প্রভাব পড়ে যানজটে।
উত্তরা থেকে বনানীতে এসে অফিস করেন মিনহাজ। তিনি বলেন, ৯টায় আমার অফিস শুরু হয়। সে হিসেবে আমি সাড়ে ৭টায় বাসে উঠি। বাস বিমানবন্দরে এসে যানজটে আটকা পড়ে। টানা ১ ঘণ্টা অপেক্ষার পর হাঁটা শুরু করি। কিন্তু ফুটপাথে মানুষের ব্যাপক চাপ। এ জন্য ঠিক মতো হাঁটাও সম্ভব হয়নি। সীমাহীন ভোগান্তির পর আমি ১০টার দিকে অফিসে ঢুকি।
ঢাকার যানজট পরিস্থিতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাবলিক গ্রুপ ট্রাফিক এলার্টে বিভিন্ন পোস্ট করছেন অনেকেই।
এদের মধ্যে সাইদুর রহমান নামে একজন লিখেছেন, অভিভাবকহীন বিমানবন্দর সড়কে যানজট নিত্যদিনের সঙ্গী। একদিকে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ অন্যদিকে বৃষ্টি সব মিলে সকাল থেকে স্থবির বিমানবন্দর সড়ক। মানুষের ভোগান্তির কোনো শেষ নেই।
বিমানবন্দর সড়ক হয়ে ভিআইপি পরিবহনে আসা তামীমুল হক নামে এক যাত্রী বলেন, এয়ারপোর্টে সড়ক পুরোটাই অচল হয়ে আছে। কোনো গাড়ি নড়ছে না। হাজার হাজার অফিসগামী মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে।
এ সড়কে প্রায় আড়াই ঘণ্টা আটকে থাকা বলাকা পরিবহনের বাসের চালক বেলাল হোসেন বলেন, আব্দুল্লাহপুর থেকে এ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। যা হাউজবিল্ডিং হয়ে আজমপুর, রাজলক্ষ্মী, জসিমউদ্দিন, এয়ারপোর্ট, কাওলা, খিলক্ষেত পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে ছড়িয়ে পড়েছে। এই সড়ক পার হতে কম পক্ষে দুই তিন ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে। বলতে গেলে পুরো সড়কই থেমে আছে।