বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

যবিপ্রবি ছাত্রলীগের দুইপক্ষে সংঘর্ষ: ২ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২২, ২০:১৭

ফেসবুক স্ট্যাটাসের জেরে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ ও অস্ত্রের মহড়ার ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিস্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ঘটনা‌ তদন্তে ৩ সদস্যের এক‌টি কমিটি গঠন করা হ‌য়ে‌ছে।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে যবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীবের সই করা পৃথক দুটি অফিসে আদেশে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। 

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

বহিষ্কৃতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং (এফবি) বিভাগের শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম হৃদয় এবং শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ আহমেদ। এই শিক্ষার্থী যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সালের অনুসারী। 

রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর করা অফিস আদেশে বলা হয়, ‘গত ১৬ সেপ্টেম্বর ছাত্রদের দুইপক্ষের মধ্যে সংঘটিত মারামারির প্রেক্ষিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে অস্ত্রধারী দুই জন ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং (এফবি) বিভাগের শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম হৃদয় এবং শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপের দায়ে যবিপ্রবি অনুযায়ী সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো। এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত চলাকালে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো। একইসাথে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট মহোদয়কে উক্ত শিক্ষার্থীদের হলে প্রবেশ ও অবস্থান না করতে দেওয়ার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে তদন্ত কমিটির তদন্ত কাজে সহায়তা করার জন্য তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে।’ 

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

যবিপ্রবি রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর করা আরেকটি অফিস আদেশে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. মেহেদী হাসানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিও গঠনের কথা জানানো হয়। তদন্ত কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. হাফিজ উদ্দিন ও সদস্য সচিব প্রক্টর ড. হাসান মো. আল-ইমরান। আগামী ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে তদের ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। 

২০১৭ সালের ৫ অক্টোবর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মশিয়ূর রহমান হলে ডাকাতি হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক শামীম হাসানকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন ডাকাতির ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী নুরুল আমিন। এই স্ট্যাটাস দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম শামীম হাসানের ভাগনে ও বর্তমান যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সাল ও তার অনুসারীরা। এ ঘটনার জেরে গত রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কদমতলায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সালের অনুসারী সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম হৃদয় ও ছাত্রলীগকর্মী জিসান আহমেদ অস্ত্র দিয়ে সভাপতি সোহেল রানার অনুসারীদের ধাওয়া করে। এরপর কদমতলা থেকে তানভীর ফয়সালের অনুসারীরা শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে এসে অবস্থান নেয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে সভাপতি সোহলে রানার নেতৃত্ব তার অনুসারীরা হলে প্রবেশ করলে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে সাংবাদিকসহ ৫ জন আহত হন।  

ঘটনাটি নিয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকর্মীদের কঠোর বার্তা দেন। তিনি জানিয়েছিলেন এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার। একইসাথে ক্যাম্পাসে কোনো বিশৃঙ্খলা হতে দেয়া হবে না।

ইত্তেফাক/এমএএম