রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডে পাঁচ দিন ধরে পানি নেই প্রায় ১০০ ভবনে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে ২ হাজারের বেশি পরিবার। গতকাল শনিবার (২২ অক্টোবর) সকালে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডে খালি বালতি ও ঝাড়ু হাতে মিছিল ও বিক্ষোভ করেন বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ারা। এ সময় ৬৬ নম্বর গলিতে ওয়াসার গাড়ি পানি দিয়ে ফিরে যাওয়ার সময় গাড়ির সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন তারা। পানি চাই, পানি দাও; ওয়াসার কাছে জবাব চাই স্লোগান দিতে থাকেন তারা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, লাইনে পানি আসা বন্ধ হওয়ার পর একাধিকবার খবর দেওয়া হলেও ওয়াসার কোনো প্রতিনিধি আসেননি। প্রথম দুই দিন ৬৬ নম্বর গলিতে গাড়িতে ৬৮ ট্যাংক পানি সরবরাহ করেছে ওয়াসা। আর শনিবার ভোর ৪টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ঐ গলিতে আসে আরো ১০-১২ ট্যাংক পানি।
৭২/গ বাড়ির কেয়াটেকার সোবহান মিয়া বলেন, এই কদিনে সাত গাড়ি পানি কিনেছি। আর ৭৩/ক বাসার মালিক কিনেছেন ছয় গাড়ি পানি। ৫৯/ডি বাসার মালিক কিনেছেন সাত গাড়ি। ওয়াসার এক গাড়ি পানির দাম ৪০০ টাকা হলেও, সেই পানি স্থানীয়দের কিনতে হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। এরপরও গাড়ির চালক ও হেলপারকে টিপস (সম্মানি) না দিলে পানি আসছে এক দিন পরে এমন অভিযোগ করেন ঐ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা একজন পুলিশ কর্মকর্তা ।
আরেক বাসিন্দা আব্দুল মান্নান বলেন, পানির লাইনে সমস্যা হওয়ার দিন সিআইডি অফিসের উলটো দিকে সার্কুলার রোডে প্রবেশের মুখে ওয়াসার লোকজন চাবি বা কিছু একটা খোলে। তারপর থেকেই এলাকায় পানির সমস্যা দেখা দেয়। শুক্রবার রাতে বারবার চাবি চেক করার দাবি জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, লাইনে যদি সমস্যা হয়, তাহলে খবর দেওয়ার পরে ওয়াসা থেকে বিষয়টির সমাধান করতে হবে। কিন্তু চার-পাঁচ দিনে কেউ আসেনি। শুক্রবার রাত ১২টার দিকে এই এলাকার দায়িত্বে থাকা ওয়াসার কর্মকর্তা সাঈদ আহমেদ আসেন। তার সঙ্গে স্থানীয়দের কথা হয়, পরে রাত ১টার দিকে এক ঘণ্টার জন্য পানি আসে। কিন্তু সব বাড়িতে পানি আসেনি।
পানির লাইনে কোনো সমস্যা নেই বলে স্বীকার করে ওয়াসার এই কর্মকর্তা বলেন, সমস্যার প্রথম দিনই সার্কুলার রোডের মুখে আমাদের লোকজন ওয়াসার এয়ার ক্লিপ ভাল্ব পরীক্ষা করে দেখেন পানি ঢুকছে কিনা। এই লাইনে চলতি বছরের শুরুতে সমস্যা ছিল, সেটা ঠিক করা হয়েছে। এখন কোনো সমস্যা নেই বলে জানি। হয়তো কোনো চাবির সমস্যা হয়েছে। একটি টিম মাঠে কাজ করছে। আশা করা যাচ্ছে, সমস্যার সমাধান হবে।
ওয়াসার কর্মকর্তা সাঈদ আহমেদ বলেন, লোডশেডিংয়ের জন্য ওয়াসার পানির উৎপাদন আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। এটার জন্যও অনেক লাইনে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এক ঘণ্টায় এখন ১ লাখ লিটার পানি কম উৎপাদন হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে অনেক জায়গায়। আমরা চেষ্টা করছি, আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই।