টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের হাই ভোল্টেজ ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে ১৬০ রানের টার্গেট দিয়েছে পাকিস্তান। শান মাসুদ ও ইফতিখারের অর্ধশতকে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ সংগ্রহ করে পাকিস্তান। রবিবার (২৩ অক্তোবর) মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। আর তার সিদ্ধান্ত যে সঠিক তার প্রমাণ শুরুতেই দিলেন ভারতের বোলার আর্শদীপ সিং।
টস হেরে ব্যাট কর তে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় পাকিস্তান। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই অধিনায়ক বাবর আজমের উইকেট হারায় পাকিস্তান। আর্শদীপের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরে যান এই ব্যাটার। রিভিউ নিয়েও ব্যর্থ হন বাবর। বল স্টাম্পে হিট করায় ১টি রিভিউ হারতে হয় পাকিস্তানকে। রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন পাকিস্তানের অধিনায়ক। এর আগে প্রথম ওভারে খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি মোহাম্মাদ রিজওয়ান। ভুবনেশ্বর কুমারের ওভারে মাত্র ১ রান তুলতে সক্ষম হন পাকিস্তানের ব্যাটার। বারর ফেরার পর ক্রিজে আসেন শান মাসুদ। এরপর তাকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন রিজওয়ান।
কিন্তু ভারতের বোলিং তোপে ধুকতে থাকে এই দুই ব্যাটার। চতুর্থ ওভারে আবারও বোলিংয়ে আসেন পেসার আর্শদীপ। এসে এবার রিজওয়ানকে সাজঘরে ফেরান তিনি। চতুর্থ ওভারের শেষ বলে থার্ড ম্যানে ক্যাচ দিয়ে আউট হন রিজওয়ান। ১২ বলে মাত্র ৪ রান করে ফেরেন তিনি। এরপর ক্রিজে আসেন ইফতিখার আহমেদ। ইনিংসের ৬ষ্ঠ ওভারের বোলিংয়ে আসেন মোহাম্মদ শামি। এই ওভারে ৮ রান তুলে পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত পাওয়ার প্লের ৬ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ২ উইকেট হারিয়ে ৩২ রান।
সেখান থেকে শান মাসুদ ও ইফতিখারের মিলে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন। দশ ওভার শেষে পাকিস্তান ২ উইকেটে ৬০ রান তোলে। ইনিংসে ১১তম ওভারে রবীচন্দ্রন অশ্বিনের ওভারের ১০ রান নেন এই দুই ব্যাটার। এর পরের ওভারের বোলিংয়ে আসেন অক্ষর প্যাটেল। এই ওভারের ৩ ছক্কায় ২১ রান নেন ইফতিখার আহমেদ। এই ওভারেই নিজের অর্ধশতক পূরণ করে তিনি। ৩২ বলে করেন ৫১ রান। ১২ তম ওভার শেষে পাকিস্তানের রান দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৯১ রান।
ইনিংসের ১৩ ওভারে শামিকে বোলিংয়ে নিয়ে আসেন রোহিত শর্মা। বোলিংয়ে এসে দ্বিতীয় বলেই ইফতিখারকে আউট করেন শামি। ২৩ বলে ৫১ রানে এলবিডব্লিউ এর ফাঁদে পড়ে ফিরে যান তিনি। এরপর ক্রিজে আসে অলরাউন্ডার শাদাব খান। তবে এসে সুবিধা করতে পারেননি তিনি। ১৪ তম ওভারে হার্দিক পান্ডিয়াকে ছক্কা মারতে গিয়ে সূর্যকুমারের হাতে ধরা পড়েন তিনি। একই ওভারের শেষ বলে শাদাবের মতোই আউট হয়ে ফিরে যান সদ্য ব্যাটিংয়ে আসা হায়দার আলি। ৪ বলে ২ রান করে ছক্কা মারতে গিয়ে সেই সূর্যকুমারের হাতে ধরা পড়েন তিনি। দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে ১৫ ওভার শেষে ৫ হারিয়ে ১০৬ রান করে পাকিস্তান।
হায়দারের আউটের পর ক্রিজে আসেন মোহাম্মদ নেওয়াজ। ১৬তম ওভারের হার্দিক পান্ডিয়ার বলে ২টি চার মেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি। ৬ বলে ৯ রান করে আউট হন তিনি। এরপর ক্রিজে আসা আসিফ আলিও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। দলীয় ১২০ রানে ৩ বলে ৪ রান করে আউট হন তিনি। পেসার আর্শদীপের তৃতীয় শিকার হন আসিফ। আর্শদীপের করা বাউন্সার বুঝতে পারেননি আসিফ। দীনেশ কার্তিককে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান আসিফ।
১২০ রানে ৭ উইকেট হারালেও এক পাশের উইকেট আগলে রাখেন ওয়ান ডাউনে নামা শান মাসুদ। শামির করা ইনিংসের ১৮তম ওভারে ২ চার ও ১ সিঙ্গেলে ৪৯ রানে পৌছান তিনি। এরপর ১৯ তম ওভারের আর্শদীপের বলে ব্যাক ওয়ার্ড পয়েন্টে ঠেলে ১ রান নিয়ে নিজের অর্ধশতক পূরণ করে মাসুদ। এরপর শাহিন আফ্রিদি স্ট্রাইকে এসে ১ ছয় ও ১ চার মারেন। ১৯ তম ওভার শেষে ৭ উইকেটে ১৪৯ রান করে পাকিস্তান।
ইনিংসের শেষ ওভার বল করতে আসেন ভুবনেশ্বর কুমার। ওভারের দ্বিতীয় বলে শাহিন আফ্রিদির উইকেট তুলে নেন তিনি। ৮ বলে ১৬ রান করে আউট হন আফ্রিদি। এরপরের বলে ক্রিজে এসেই ছক্কা মারেন হারিস রউফ। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। ভারতের পক্ষে আর্শদীপ সিং ও হার্দিক পান্ডিয়া নেন ৩টি করে উইকেট।