রোববার, ০৪ জুন ২০২৩, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

বিরল রোগে আক্রান্ত শিশু বিনা মূল্যে পাচ্ছে ২২ কোটি টাকার ইনজেকশন

 

 

আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২২, ০০:৫৬

মানিকগঞ্জের শিশু রায়হান। স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি (এসএমএ) নামক এক বিরল রোগে আক্রান্ত সে। যে রোগে আক্রান্ত শিশু জন্মের দুই বছরের মধ্যেই মারা যায়। আর এই বিরল রোগের চিকিৎসাও ব্যয়বহুল। একটি ইনজেকশনের মূল্যই বাংলাদেশি টাকায় ২২ কোটি টাকা। আর মূল্যের একটি ইনজেকশনই বিনা মূল্যে বাংলাদেশকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই ইনজেকশনটি রায়হানের শরীরে আজ মঙ্গলবার পুশ করা হবে বলে জানিয়েছেন নিউরো সায়েন্স ইনস্টিটিউটের যুগ্ম-পরিচালক অধ্যাপক বদরুল আলম। 

তিনি বলেন, বেশ কিছু শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের শরীরে রক্তসহ নানা বিষয়ে পরীক্ষা করে প্রতিবেদন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে। এমনকি শিশুদের রক্তের নমুনাও সেখানে পাঠানো হয়। সেই রক্তের পরীক্ষানিরীক্ষা করে রায়হানকে সিলেক্ট করেছে যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকরা। যুক্তরাষ্ট্রে এ ওষুধটি বাজারজাত করা হয়েছে। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো এ ওষুধ ক্রয় করে থাকে। যারা দরিদ্র রাষ্ট্র তাদের দেশে এ ওষুধ সীমিতসংখ্যক পাঠানোর জন্য লটারি পদ্ধতি বেছে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই লটারিতেই বাংলাদেশে অত্যাধুনিক বিশেষায়িত হাসপাতাল নিউরো সায়েন্সেস ইনস্টিটিউটের শিশু নিউরোলজি বিভাগ অংশগ্রহণ করে। 

চিকিৎসকরা বলছেন, নিজ আত্মীয়-স্বজনদের বিশেষ করে মামাতো-ফুফাতো ভাই বোনের মধ্যে বিয়ে হলে পরবর্তীকালে এ ধরনের শিশু জন্ম নিতে পারে। এজন্য চিকিত্সকরা আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে বিয়ে নিরুত্সাহিত করেছেন।

শিশু রায়হান নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের ৯০৯ নম্বর কেবিনে ভর্তি। আজ সকালে তার শরীরে স্যালাইনের মাধ্যমে ঐ ইনজেকশনটি পুশ করা হবে। সময় লাগবে এক ঘণ্টা।

এদিকে ২২ কোটি টাকা মূল্যের এ ইনজেকশনটি ইতিমধ্যে দেশে এসেছে। এর ট্যাক্স এসেছে ১ কোটি টাকার বেশি। এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম ঐ ট্যাক্স মওকুফ করে দিয়েছেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি একটি বিরল ও জটিল জন্মগত রোগ। রোগটি জিনগত কারণেও হয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত শিশুর হাত-পা ধীরে ধীরে চিকন হয়ে যায়। তারা ঠিকভাবে বসতে বা দাঁড়াতে পারে না। আক্রান্ত হয় ঘনঘন নিউমোনিয়ায়। জন্মের দুই বছরের মধ্যেই মারা যায়। এ রোগে আক্রান্ত অনেক শিশু বাংলাদেশে রয়েছে। এই রোগের ওষুধ আবিষ্কার করেছে সুইজারল্যান্ডের কোম্পানি নোভার্টিজ। এটা যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ কর্তৃক অনুমোদিত। দীর্ঘদিন গবেষণার পর এ ওষুধটি আবিষ্কার করা হয়েছে। ওষুধটি প্রয়োগ করলে আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে ৮০ ভাগ শিশু সুস্থ হয়ে যায় বলে জানান চিকিৎসকরা।

ইত্তেফাক/ইআ