শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কাজে আসছে না ভারতের দেয়া অ্যাম্বুলেন্সগুলো

আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২২, ০৯:২৮

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভারত সরকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া লাইফ সাপোর্টসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন তিনটি অ্যাম্বুলেন্স রোগী পরিবহনের কোন কাজে আসছে না। বর্তমানে অ্যাম্বুলেন্সগুলো প্রায় গ্যারেজবন্দি অবস্থায় আছে। এক প্রকার অচল হতে চলেছে। এ অবস্থায় অন্য কাজে লাগিয়ে অ্যাম্বুলেন্সলো সচল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ভারত সরকারের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে লাইফ সাপোর্টের সুবিধা সম্পন্ন ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্সের চাবি বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এর মধ্যে ৩টি অ্যাম্বুলেন্স গত বছরের ২৯ অক্টোবর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল, আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেয়া হয়। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সগুলো রোগী পরিবহনের কোন কাজে আসছে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকা একটি অ্যাম্বুলেন্স এখন একেবারে গ্যারেজবন্দি। চালানো হয় না বলে এর ব্যাটারি প্রায় অকেজোর পথে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল ও কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সগুলো সচল থাকলেও এগুলো শুধুমাত্র করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলো দিয়ে রোগী পরিবহন করানো হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পবিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হিমেল খান বলেন, ‘ভারতীয় অ্যাম্বুলেন্সটিসহ আমার এখানে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স আছে। এর মধ্যে একটি নষ্ট হয়ে গেছে। আরেকটি এখনো সচল। ভারতীয় অ্যাম্বুলেন্সটি গ্যারেজে রাখা আছে। তবে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য আমার এখানো কোনো চালক নেই। আমার জন্য সরকারি বরাদ্দের যে গাড়ি আছে, এর চালক দিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স চালানো হয়। তবে এটাও নিয়মের বাইরে। কারণ আমার গাড়িচালক আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত। নিয়ম অনুসারে এ ধরণের নিয়োগপ্রাপ্ত কেউ অ্যাম্বুলেন্স চালাতে পারবেন না। তবে মানবিক কারণে শুধুমাত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত রোগী পৌঁছে দেওয়া হয়। আর ভারতীয় অ্যাম্বুলেন্সটি চালাতে গেলে চালকের বেশ সমস্যা হয়। চালক বলছেন, চালাতে গিয়ে এটির নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়। যে কারণে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অরুপ পাল বলেন, করোনা ভ্যাকসিনের কার্যক্রমে ভারতের উপহারের অ্যাম্বুলেন্স কাজে লাগানো হয়েছে। তবে রোগী পরিবহনের ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে এটি কাজে লাগানো হয়। বাড়তি খরচসহ নানা কারণে বেশিরভাগ রোগীর স্বজনরাই এ অ্যাম্বুলেন্সটি নিতে চায় না, এটা একটা সমস্যা। এছাড়া আমাদের এখানে আরও দুটি অ্যাম্বুলেন্স আছে।

এ ব্যাপারে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান বলেন, ভারতের দেওয়া উপহারের অ্যাম্বুলেন্সটি চালাতে চালকের অনীহা রয়েছে। চালক বলছেন, এ অ্যাম্বুলেন্সটি চালাচলের সময় নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। যে কারণে ঝুঁকি নিতে চান না। এ অবস্থায় এখন করোনার ভ্যাকসিনের কার্যক্রমে লাগানো হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সকে।

ইত্তেফাক/এসকে