শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নতুন করে ইইউ-র সদস্য হবার আগ্রহ দেখাচ্ছে তুরস্ক

আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২২, ১৯:২৬

উক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে তুরস্কের গুরুত্ব বেড়ে গেছে৷ ন্যাটোর সদস্য হওয়া সত্ত্বেও সে দেশ পশ্চিমা বিশ্বের মতো রাশিয়ার উপর কোনো নিষেধাজ্ঞা চাপায় নি। প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ান বরং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সংলাপ ও সহযোগিতার পথ খোলা রেখেছেন। ফলে রাশিয়ার সরকার ও সাধারণ মানুষও তুরস্কের উপর আরও নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। এর্দোয়ান ফিনল্যান্ড ও সুইডেনকে ন্যাটোর সদস্য হবার পথে বাধা এখনো পুরোপুরি দূর করেন নি। ন্যাটোর সদস্য ও প্রতিবেশী দেশ  গ্রিসের প্রতি বৈরি মনোভাব দেখিয়েও তিনি নিজের প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়ানোর চেষ্টা করে চলেছেন।

বলা বাহুল্য এর্দোয়ানের নেতৃত্বে তুরস্কের এমন ভূমিকা ন্যাটো তথা ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য চরম অস্বস্তির কারণ। এমনই প্রেক্ষাপটে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ইইউ-র সদস্য হওয়ার বিষয়টি নতুন করে উত্থাপন করলেন। মঙ্গলবার জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনার সময় তিনি ‘নিবিড় সংলাপ'-এর মাধ্যমে ইউরোপীয় রাষ্ট্রজোটের অংশ হবার প্রক্রিয়া চাঙ্গা করার আশা প্রকাশ করেন। আপাতত ইইউ-র সঙ্গে সংলাপের প্রক্রিয়া নতুন করে চালু করে শুল্ক ইউনিয়ন কাঠামো আরও জোরদার করতে চান এর্দোয়ান। সেই সঙ্গেই উরোপীয় ইউনিয়নের পূর্ণ সদস্য হিসেবে যোগদান সংক্রান্ত আলোচনাও নতুন করে শুরু করতে চান তিনি। উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সাল থেকে তুরস্ক আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদানের প্রার্থী হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও সেই লক্ষ্যে আলোচনা বেশ কিছুকাল কার্যত বন্ধ রয়েছে। ২০০৫ সাল থেকে সংলাপ শুরু হলেও ২০১৬ সালে তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর মানবাধিকার পরিস্থিতি ও আইনের শাসনের অবনতির সমালোচনা করে আসছে ইইউ। গত মাসেই ব্রাসেলস ইইউ-র সদস্য হওয়ার পথে তুরস্কের অগ্রগতির অভাবের উল্লেখ করেছে৷ তুরস্কের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির ভূমিকা সম্পর্কে গভীর মতবিরোধ রয়েছে বলে ইইউ জানিয়েছে।

এর্দোয়ানের বিতর্কিত ভূমিকা সত্ত্বেও তুরস্ককে পুরোপুরি উপেক্ষা করা পশ্চিমা জগতের পক্ষে সম্ভব নয়৷ জার্মান চ্যান্সেলর শলৎসও তাঁর সঙ্গে সংলাপের পথ খোলা রাখতে চান। গ্রিসের সঙ্গে তুরস্কের বিরোধের ক্ষেত্রে মঙ্গলবার এর্দোয়ান নাকি জার্মান চ্যান্সেলরকে ‘নিরপেক্ষ' থাকার দাবি করেছেন। তুরস্কের সরকারি সূত্রে এমনটাই দাবি করা হচ্ছে। জার্মানির সরকারি মুখপাত্র স্টেফেন হেবেস্ট্রাইট এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, গ্রিসের প্রতি তুরস্কের দাবি নিয়ে কোনো কথা হয় নি। তাঁর সূত্র অনুযায়ী, শলৎস ও এর্দোয়ান শুধু আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। সেইসঙ্গে রাশিয়া যেভাবে বার বার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়ে চলেছে, সেই পদক্ষেপকে দায়িত্বজ্ঞানহীন হিসেবে বর্ণনা করেছেন দুই নেতা।

গ্রিসের কয়েকটি দ্বীপে সামরিক কার্যকলাপের বিরোধিতা করে তুরস্ক এমনকি হামলারও প্রচ্ছন্ন হুমকি দিচ্ছে। আংকারার মতে, এর মাধ্যমে গ্রিস আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। এথেন্স সফরে গিয়ে শলৎস সেই হূমকির পরিপ্রেক্ষিতে গ্রিসের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। গ্রিস ইউক্রেনকে পুরানো ট্যাংক পাঠিয়ে তার বদলে জার্মানি থেকে যে মার্ডার ট্যাংক পেয়েছে, সেগুলি তুরস্কের সীমান্তে মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

 

 

ইত্তেফাক/জেডএইচ