বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শিবচরে স্বাস্থ্য খাতে কোন ধরনের অনিয়ম সহ্য করা হবে না: চিফ হুইপ

আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২২, ০০:০৬

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ ও মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনের ৬ বারের সফল সংসদ সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন বলেছেন, শিবচরের স্বাস্থ্য খাতে কোন ধরনের অনিয়ম সহ্য করা হবে না। স্বাস্থ্যসেবা মানুষের মৌলিক অধিকার। আমাদের যে জনবলের কাঠামোই আছে তা যদি আমরা ঠিকমতো কাজ করাতে পারি তাহলে স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়তো। দুপুর হলেই ডাক্তাররা বেসরকারি ক্লিনিকে চলে যায় অনেক দেশেই এগুলো নাই। সরকারি চাকরী করবে নাহলে বেসরকারি চাকরী করবে। 

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে জেলার শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য সেবা খাতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি।

এ সময় চিফ হুইপ আরও বলেন, শিবচরেও জনবল সংকট আছে। কিন্তু কিছু ডাক্তার শিবচর থেকে বেতন নেবে অথচ ডেপুটেশনে থাকবে ঢাকায়, এটাতো হতে পারে না। এটা এলাকার মানুষকে সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটা দুর্নীতি। এটা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। বেতন নেবে শিবচর থেকে চাকুরী করবে ঢাকার বেসরকারি হাসপাতালে, মাননীয় মন্ত্রী এটা বন্ধ হওয়া দরকার। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দেশে স্বাস্থ্য খাতে প্রায় ৩-৪ লাখ পদে জনবল সংকট রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির সময় আমরা ১৫ হাজার চিকিৎসক ,২৫ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছি। অথচ ৪০ বছরে ডাক্তার ছিল মাত্র ১৮ হাজার,নার্স ছিল ২০ হাজার। করোনা পরিস্থিতি ও ডেঙ্গু সামাল দিয়ে আমরা এখন স্বাস্থ্য খাতের জনবল সংকট নিয়ে কাজ করছি। আমরা কমিটিও তৈরি করেছি। এখন করোনা যেহেতু কম আছে আমরাই বিভিন্ন উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় শহরের হাসপাতালগুলোতে আমরা যাচ্ছি যাতে আমাদের হাসপাতালগুলো ভালভাবে চলে। মেশিনগুলো যাতে সচল থাকে সেটাও দেখা হচ্ছে। 

মন্ত্রী বলেন, এটা সত্যি যে, আমাদের মেশিনগুলো বেশি নষ্ট হয়ে পড়ে থাকে আর পাশের প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোর এক্সরে বা প্যাথলজিক্যাল মেশিনগুলো ভাল চলে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার বিষয়। সরকারতো কম দিচ্ছে না। জেলা হাসপাতালগুলোতে দেখবেন আমরা কি করেছি। বিএনপির আমলে মেডিকেল কলেজ ছিল হাতেগোনা ১৫ টা এখন ৩৮ টা। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ও ছিল না বিএনপির আমলে এখন ৪ টা। ক্যান্সার কিডনি ,হার্টেও স্পেশাল হাসপাতাল হচ্ছে। কারণ এসব রোগী বেড়ে গেছে।

মন্ত্রী আরো বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার জিনিসপত্রের দাম বাড়ায়নি। যুদ্ধের কারণে দাম বাড়ছে জিনিসপত্রের। রাশিয়া ইউক্রেন থেকে তেল ও শস্য সরবরাহ বন্ধ থাকায় ও করোনার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। খাবারের অভাব যাতে না হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী উৎপাদন বাড়াতে বলেছেন। বিএনপি এসব নিয়েও পানি ঘোলা করছে। কোন দেশে এমন সময় কেউ সরকারের বিরুদ্ধাচারন করে না। অথচ তারা মিথ্যাচার করেই চলেছে। তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে ব্যস্ত। বিএনপি জামায়াতের এটা চিরদিনের স্বভাব। পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীসহ বহু মানুষকে হত্যা করেছিল। আবারও সেই চিন্তা। লাঠি নিয়ে মিছিল করে বলে ধাক্কা দিয়ে সরকার ফেলে দেবে। তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছে। হিমালয় পর্বতকে ধাক্কা দিয়ে ফেলা যায় না। আওয়ামীলীগ সরকার শেখ হাসিনার সরকার হিমালয় পর্বত।  

এ দিন স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও চীফ হুইপ জেলার শিবচরের সন্ন্যাসীরচরে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ট্রমা সেন্টার উদ্বোধন ও সংলগ্ন জমিতে জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণের জমি পরিদর্শন, চৌধুরী ফাতেমা বেগম মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ১০ শয্যা থেকে ২০ শয্যায় উন্নীতকরনের কাজ উদ্বোধন, শেখ হাসিনা ইনষ্টিটিউট অব হেলথ এন্ড টেকনোলজী উদ্বোধন, নির্মাণাধীন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নার্সিং ইনষ্টিটিউট এন্ড কলেজ পরিদর্শন, ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট ট্রেনিং স্কুল(ম্যাটস) এর ভিত্তিপ্রস্তর , শিবচর উপজেলা ১শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল পরিদর্শন ও কোয়ার্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন । 

কর্মসূচীগুলোতে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল হামিদ, পরিবার পরিকল্পনা ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক যুগ্ম সচিব মো. মাহাবুব আলম, স্বাস্থ্য বিভাগের ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিয়া, মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুনির চৌধুরী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. সামিউল ইসলাম সাদিক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী গোলাম মাহাবুব, পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম (বিপিএম বার, পিপিএম) , শিবচর ডায়াবেটিক সমিতির চেয়ারম্যান রাজিয়া চৌধুরী, মাদারীপুর সিভিল সার্জন ডা. মুনির আহমেদ খান, মাদারীপুর পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ পরিচালক গোলাম মো. আজম, মাদারীপুর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদুল আলম, শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আ. লতিফ মোল্লা, পৌর মেয়র মো. আওলাদ হোসেন খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাজিবুল ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ, শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাজাহান মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. সেলিম, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. তোফাজ্জল হোসেন খান তোতাসহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

 

ইত্তেফাক/ইআ