শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কৃষিকাজে ভাগ্য বদলেছে লিটনের, আয় লাখ লাখ টাকা

আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২২, ১২:১০

ছোনের পুরোনো ঘর আর মাছ ধরে সংসার চালানোর কথা প্রায়ই মনে হয় লিটন আলী শেখের। একসময় সংসার চালাতে গিয়ে তিনি হিমশিম খেতেন। পরিবারের সদস্যদের জন্য দু'বেলার খাবার জোটানো ছিল অনিশ্চিত। ছেলেমেয়ের পড়াশোনার চিন্তা-ভাবনা যেন ছিল বিলাসিতা। তবে এখন আর সেই করুণ দশা নেই।

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার চরনুরনগর এলাকার কৃষক লিটন আলী শেখ। কৃষিকাজ করেই তিনি তার ভাগ্য বদলে ফেলেছেন।

ছোনের ঘরের জায়গায় তৈরি হয়েছে আধাপাকা ঘর। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ জোগাতে এখন আর চিন্তা করতে হয় না। কৃষিকাজ করেই উপার্জন করেছেন লাখ লাখ টাকা।

জানা যায়, লিটন আলী শেখের আদা, হলুদ, ভিয়েতনামি নারিকেল গাছ, লাউ গাছ, আম গাছসহ বিভিন্ন ফলমূলের গাছ লাগিয়েছেন তিনি। এসব থেকে তার প্রতি বছরই কয়েক লাখ টাকা আয় হয়।

তিনি জানান, এলাকাটি বন্যাকবলিত হওয়ায় সময় আখ ও পাটের আবাদ ছাড়া কোনো আবাদ হতো না। তাই তিনি এলাকায় ধান, গম, আদা, লাউ, বেগুন, আলু, হলুদ ও ফুলকপিসহ নানা ধরনের সবজির আবাদ শুরু করেন

লিটন আলী বলেন, ১৯৯৮ সালে ১১ হাজার টাকা ধার নিয়ে ৪ বিঘা লিজের জমিতে বাদামের আবাদ শুরু করি। এখন প্রতি বছর সবজি আবাদ করে ভালো আয় করছি। চলতি বছরে ৩৩ শতাংশ জায়গায় ১৫ হাজার টাকা খরচ করে আমি গ্রিন জাতের লাউ চাষ করে ৭০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। আরও ২০-৩০ হাজার টাকা লাউ বিক্রি করবো।

এছাড়া ৫০ শতক জায়গায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে বারি-১ জাতের আদা চাষ করেছেন লিটন। সেখান থেকে প্রায় লাখ টাকা বিক্রির আসা করছেন।

তিনি বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় চাষাবাদ করে আমি অর্ধকোটি টাকার সম্পত্তি করেছি।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকায় সব ধরনের ফসল উৎপাদন হয়, তবে সবজি ফসল বেশি উৎপাদন হয়।

কামারখন্দ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তাহসীন তাবাসসুম জানান, কৃষক লিটনকে সার্বক্ষণিকভাবে কৃষি পরামর্শ, কৃষি প্রদর্শনের মাধ্যমে সার-বীজ ও কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদান করা হয়েছে।

কামারখন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জেরিন আহম্মেদ জানান, লিটন আলী শেখ চরনুরনগর এলাকার সফল সবজি চাষী। তাকে সার-বীজ দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হয়। সবজি চাষে অল্প খরচে দুইগুণ লাভ হওয়ায় এলাকার কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। কৃষিকাজে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করায় স্বল্প সময়ে কম খরচে অধিক ফসল উৎপাদন হচ্ছে।

ইত্তেফাক/এসকে