রোববার, ২৮ মে ২০২৩, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

‘ফারদিন ধূমপান করেছে, এ কথা কেউ বলতে পারবে না’

আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২২, ১৮:৩৭

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ফারদিন নূর হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন ফারদিনের বাবা ও সহপাঠীরা। 

সোমবার (১৪ নভেম্বর) বুয়েটের শহীদ মিনারের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে নিজেদের এসব দাবি জানান তারা। 

তারা বলছেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফারদিনের মাদক সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে যে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে তা নিয়ে কথা বলেন তারা। ভবিষ্যতে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমগুলো আরো বেশি সতর্ক হবেন বলে প্রত্যাশা করেন তারা। ‘ফারদিন নূর হত্যাকাণ্ডের দ্রুত তদন্তের দাবিতে’ সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মানববন্ধন। ছবি: ইত্তেফাক
মানববন্ধনে ফারদিন নূর পরশের বাবা বলেন, এটা আমি বিশ্বাস করি না। আমি ধূমপান ছাড়তে পারিনি বলে সন্তানদের কাছে আমার ভালোবাসা বা গর্বের জায়গা বোধ হয় ক্ষুণ্ন হয়েছে। আমার তিন সন্তান ধূমপান কেন, ধূমপানের (সিগারেট) ধোঁয়াটা পর্যন্ত নিতে পারে না। ফারদিন বুয়েট ক্যাম্পাসে ছিলো। উদ্ভাস কোচিংয়ের শিক্ষক ছিলো। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে যেত। কেউ কি বলতে পারবে ফারদিন ধূমপান করেছে? সে ধূমপায়ী ছিলো না। যে ধূমপান করে না, সে ফেনসিডিল আসক্ত হওয়ার প্রশ্নই আসে না। একজন বিতার্কিক, যে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় যাবে, সে কি ফেনসিডিলসেবী হবে? ফেনসিডিলসেবীদের যে অবস্থা থাকে, সেই অবস্থায় কি বিতর্কে অংশ নেওয়া যায়? এ ধরনের সংবাদ...তদন্ত কার্যক্রম ব্যাহত করা বা নৈতিক মূল্যবোধের জায়গা থেকে একজন বিতার্কিকের পক্ষে যারা দাঁড়িয়েছিলেন, তাদের মনোবল ভেঙে দেওয়া।

ফারদিনের বাবা বলেন, বলা হচ্ছে মাদক কারবারিরা ছয়-সাতজন মিলে ফারদিনকে হত্যা করেছে। কিন্তু তাকে শুধু বুকে ও মাথায় আঘাত করা হয়েছে। ছয়-সাতজন মিলে মারলে হাতে বা পায়ে কিছুটা হলেও আঘাত করার কথা ছিল। কিন্তু তারা তা করেননি।

তিনি বলেন, একটা ছেলে যে বুয়েটে ডিবেটিং করে। ইন্টারন্যাশনাল প্রতিযোগিতায় যাবে সে কীভাবে ফেনসিডিল আসক্ত হবে? যারা ফেনসিডিল সেবন করেন তারা কী ডিবেট করার অবস্থায় থাকে? তাদের দ্বারা কী ইন্টারন্যাশনাল প্রতিযোগিতা করা সম্ভব?

মানববন্ধন। ছবি: ইত্তেফাক

সাধারণ ডায়েরির (জিডি) পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকার প্রতি প্রশ্ন রেখে ফারদিনের বাবা বলেন, ফারদিন নিখোঁজ হওয়ার পরদিন আমরা থানায় জিডি করি। জিডির পরিপ্রেক্ষিতে তারা কী ব্যবস্থা নিয়েছিলেন তা আমরা এখনো জানতে পারিনি। জিডি করার পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোনো আপডেট পাইনি। জিডি থেকে লাশ পাওয়া পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমে আমরা সন্তুষ্ট না।

ফারদিন হত্যার বিষয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, দুঃখজনকভাবে গত কয়েকদিন কিছু গণমাধ্যমে ফারদিনকে নিয়ে কিছু আপত্তিকর ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচারিত হয়েছে। যা আমাদের হতাশ করেছে। বুয়েট সাংবাদিক সমিতির মাধ্যমে এরই মধ্যে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি ও সত্য তুলে ধরেছি। আমরা আশা করবো ভবিষ্যতে গণমাধ্যমগুলো সংবাদ প্রকাশে আরও বেশি সতর্ক হবে।

ইত্তেফাক/পিও