শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বাংলাদেশ-ফিলিপিন্স দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সূবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সেমিনার

আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২২, ০৪:৩০

বাংলাদেশ-ফিলিপিন্স দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থাপনের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ম্যানিলাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও  ফিলিপিন্স বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে ‘বাংলাদেশ-ফিলিপিন্স সম্পর্কের ৫০ বছরঃ অর্জন, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনাসমূহ’ শীর্ষক একটি সেমিনারের আয়োজন করে। বৃহস্পতিবার ফিলিপিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এশিয়ান সেন্টারের জিটি-টয়োটা অডিটোরিয়ামে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। 

সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিলিমান ক্যাম্পাস উপাচার্য অধ্যাপক ফিদেল নেমেঞ্জো, একাডেমিক বিষয়ক উপ- উপাচার্য অধ্যাপক মা তেরেসা পায়ঙ্গায়ং, এশিয়ান সেন্টারের ডিন অধ্যাপক হেনেলিতো সেভেলিয়া,  ফিলিপাইন পররাষ্ট্র দপ্তরের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান মারিয়া আনা লিলিয়া, ডিপ্লোম্যাটিক কোরের ডিন ও কূটনীতিকবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ের অনুষদবৃন্দ, ছাত্র-ছাত্রী এবং মিডিয়াকর্মীসহ দেড় শতাধিক অতিথি অংশগ্রহণ করেন। হাইব্রিড প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত সেমিনারে একই সাথে জুম মাধ্যমে শতাধিক অতিথি অংশগ্রহণ করেন।

ছবি- সংগৃহীত

সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত উক্ত সেমিনারে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভিডিওবার্তা প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্যাম্পাস উপাচার্য অধ্যাপক ফিদেল নেমেঞ্জো। 

১৯৭৩ সালের অক্টোবরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যানিলায় সংক্ষিপ্ত সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের শক্ত ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, দক্ষিন এশিয়া ও দক্ষিন পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দুটি দেশ হিসেবে সামাজিক, অর্থনৈতিক, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ফিলিপিন্স এবং বাংলাদেশ অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। দু’দেশের মধ্যকার পারস্পারিক যোগাযোগ বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।  

রাষ্ট্রদূত এফ এম বোরহান উদ্দিন তাঁর বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন অভিযাত্রা, ভবিষ্যৎ রূপকল্প ও অনন্য সাফল্যসমূহ তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পরেই ফিলিপিন্স সরকার ও জনগণের দেয়া সমর্থনের কথাও তিনি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বাংলাদেশ-ফিলিপিন্সের মধ্যে বিশেষ করে কৃষি, ঔষধ, শিক্ষা, আইসিটি, ট্যুরিজম এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহুমুখী সহযোগিতা সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোকপাত করেন। সেই সাথে তিনি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে করনীয় সম্পর্কে তাঁর অভিমত সকলের সামনে তুলে ধরেন। 

ছবি- সংগৃহীত

ফিলিপাইন পররাষ্ট্র দপ্তরের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান মারিয়া আনা লিলিয়া তাঁর বক্তব্যে বলেন, ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ-ফিলিপিন্সের মধ্যে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। তিনি এ বছর বাংলাদেশ-ফিলিপিন্স মধ্যকার  দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে দুই দেশের সম্পর্ক ভবিষ্যতে নতুন উচ্চতায় উন্নীতকরণে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আরো বলেন, দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে, বিশেষ করে কোভিড পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় স্বাস্থ্য, কৃষি, ঔষধ ও বাণিজ্য খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির অবারিত সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এশিয়ান সেন্টারের ডিন অধ্যাপক হেনেলিতো সেভেলিয়া। অধ্যাপক হেনেলিতো বাংলাদেশ-ফিলিপিন্স সম্পর্কের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন দিকের উপর আলোকপাত করেন। তিনি বিশেষভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভাষা আন্দোলনের ভূমিকার উপর অধিক গুরুত্বারোপ করেন। তিনি দু’দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরো নিবিড় করার উপর জোর দেন। আঞ্চলিক ও আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ-ফিলিপিন্সের যৌথ ভুমিকা প্রয়োজনীয়তার উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করেন। জলবায়ু ও অভিবাসনসহ আঞ্চলিক শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বাংলাদেশ ও ফিলিপিন্সকে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণে পরামর্শ প্রদান করেন। একই সাথে, শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিনিয়োগ ও ব্যবসা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। প্রবন্ধ উপস্থাপন শেষে প্যানেল আলোচনায় বক্তাগণ উপস্থিত অতিথিদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। 

ইত্তেফাক/এমএএম