দীর্ঘ বারো বছর ধরে সমাবর্তনের অপেক্ষায় দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) প্রায় ১৬ হাজারেরও বেশি গ্র্যাজুয়েট। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ২৩ বছর পেরোলেও সমাবর্তন হয়েছে মাত্র একবার! সর্বশেষ ২০১০ সালে আয়োজিত প্রথম সমাবর্তনের পর এক যুগ পেরোলেও দ্বিতীয় সমাবর্তনের আয়োজন করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিনিয়ত ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ উদ্যোগের অভাবে সমাবর্তন হচ্ছে না।
২০১০ সালের ৯ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন আয়োজন করেন তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আফজাল হোসেন। প্রথম সমাবর্তনে গ্র্যাজুয়েটদের হাতে সনদ তুলে দেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এতে ২০০৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করা ৯ জন পিএইচডি, ৭৯ জন মাস্টার্স এবং ৭৩০ জনকে ব্যাচেলর ডিগ্রির সনদ প্রদান করা হয়।
এরপর দীর্ঘ এক যুগ পেরোলেও কোনো সমাবর্তন পাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এদিকে প্রথম সমাবর্তনের পর ২০০৭-২০০৮ শিক্ষাবর্ষ হতে স্নাতক পাশ করা সমাবর্তন পাওয়ার যোগ্য প্রায় ১৬ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী অপেক্ষায় আছেন পাইপলাইনে। এদিকে যতোই দিন গড়াচ্ছে ততোই বেড়ে চলছে এই সংখ্যা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ইসমত জাহান লিমা বলেন, হাবিপ্রবি প্রতিষ্ঠার ২৪ বছরে মাত্র একবার সমাবর্তনের আয়োজন করতে পেরেছে। এরপর গত এক যুগেও কোন সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়নি। এমতাবস্থায় হাবিপ্রবির একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিদ্রুত দ্বিতীয় সমাবর্তনের নতুন ঘোষণাসহ প্রতি দুইবছর অন্তর অন্তর সমাবর্তন চাই ।
বিশ্ববিদ্যালায়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আজিজুর রহমান বলেন, একজন শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে আচার্যের হাতে মূল সনদপত্র নিয়ে বের হওয়া। কিন্তু হাবিপ্রবিতে স্নাতক শেষ করা একজন শিক্ষার্থী তার প্রাপ্য এই স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতা, উদাসীনতা এবং যথাযথ উদ্যোগের অভাবে সমাবর্তন হচ্ছে না। এটা আমাদের জন্য যেমন কষ্টের তেমনি লজ্জার। আমাদের একটাই আশা, একটাই চাওয়া আমাদের প্রাপ্য সম্মানের সঙ্গে উৎসবমুখর বিদায় চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইত্তেফাককে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান বলেন, সমাবর্তন আমাদের পরিকল্পনায় আছে। সময়-সুযোগ হলে করা যাবে। কবে হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সময় হলে সবাই জানতে পারবেন।