শাখা-সিঁদুর পরিয়ে মহাধুমধামের মধ্য দিয়ে বট-পাকুড় গাছের ব্যতিক্রমী বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। বিষয়টি শুনতে আশ্চর্যজনক মনে হলেও এমন ঘটনা ঘটেছে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়ায়।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় লগ্ন ঠিক করে গ্রামের তাঁতমালিক শীতল সরকারের বাড়িতে নিয়ম মেনে বিয়ে সম্পন্ন হয় বট-পাকুড়ের।
এ বিয়েতে ৭ শতাধিক অতিথি অংশ নেন। আয়োজক ও অতিথিদের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গা থেকে নানা পেশার মানুষ পাকুড় ও বট গাছের বিয়ে দেখতে ভিড় জমায়।
বিয়ের আয়োজক শীতল সরকার বলেন, আমার বাড়ির একটি তালগাছে প্রায় ১৫ বছর আগে একটি পাকুড় গাছের জন্ম হয়। তার বেশ কয়েক বছর পর পাকুড় গাছের পাশেই জন্ম হয় আরেকটি বট গাছের।
তিনি বলেন, হিন্দু শাস্ত্রমতে পাশাপাশি পাকুড় গাছ ও বট গাছের জন্ম হলে বিয়ে দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু নানা সমস্যার কারণে সেই পাকুড় ও বট গাছের বিয়ের আয়োজন করতে পারিনি। পাকুড় ও বট গাছের বিয়ে না দেওয়ায় আমার পরিবারে নানা সংকট ও সমস্যা দেখা দেয়। এসব সমস্যা ও সংকট কাটাতে দুই গাছের বিয়ে দিতে হবে বলে আমিসহ আমার পরিবারের কয়েকজন সদস্য একাধিকবার স্বপ্ন দেখি। তারই ধারাবাহিকতায় পাকুড় ও বট গাছের এই বিয়ের আয়োজন।
গোপালপুর গ্রামের দেবাশীষ মন্ডল মিঠুন ও আনন্দ মোহন মজুমদার বলেন, অনেকদিন ধরেই শুনছি পাকুড় গাছ ও বট গাছের বিয়ে হবে। অনেক প্রতীক্ষার পর শুক্রবার বিকেলে পাকুড় গাছকে ধুতি-পাঞ্জাবি, মুকুট এবং বট গাছকে শাড়ি, শাখা, সিঁদুর, মুকুট পড়িয়ে আনুষ্ঠানিক বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়েতে পাকুড় গাছকে বর ও বট গাছকে কনে সাজিয়ে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। পাকোড় গাছ ও বট গাছের বিয়ে উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে পুরো গ্রামে এক মহানন্দের সৃষ্টি হয়।
পাকুড়-বটের বিয়ে উপলক্ষে আলোকসজ্জা আর ঢাক-ঢোলের পাশাপাশি সাউন্ডবক্সে নানা গান বাজিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত অতিথিরা। সন্ধ্যায় আমরা বিয়ের আয়োজক শীতলের বাড়িতে গ্রামের সবাই নৈশভোজে অংশ নেই।