বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

এক বছরেই শেষ ৫৪ লাখের সেতু, দুর্ভোগে সাত গ্রামের মানুষ

আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২২, ১৪:৩৫

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। সেতুটি নির্মাণের এক বছর পরে ভেঙে পড়ে। ভেঙে যাওয়ার তিন বছর পার হলেও সেতুটি পুনরায় নির্মাণ না করায় দুর্ভোগে রয়েছেন সাত গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত হওয়ায় সেতুটি এক বছর পরেই ভেঙে যায়। তাই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে দ্রুত একটি টেকসই সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।

জানা গেছে, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় চরশৌলমারী ইউনিয়নের চরশৌলমারী বাজার সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটির কাজ পায় ‘মেসার্স মনিরুল ইসলাম’ নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয় মোট ৫৪ লাখ ৪ হাজার ৬৫০ টাকা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কাজটির তত্ত্বাবধানে ছিলেন। ২০১৮ সালে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। এর এক বছর পর সেতুটি ভেঙে যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, খালের ওপর নির্মিত সেতুটির মাঝ বরাবর ভেঙে দেবে গেছে। সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়কের মাটি ধসে গেছে। মানুষের যাতায়াতের জন্য এলাকাবাসীর উদ্যোগে ভাঙা এ সেতুটির পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে একটি বাঁশের সাঁকো। সাঁকোটির অবস্থাও নড়বড়ে। এতে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন শিশু-শিক্ষার্থীসহ হাজারও মানুষ।

সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে রয়েছেন উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়নের ঘুঘুমারী, চরঘুঘুমারী, সুখেরবাতি, চরগেন্দার আলগা, ময়েজেরচর, খেদাইমারী ও সুখেরচর এলাকার ১৫ হাজারের অধিক মানুষ। ভাঙা এ সেতুর একটু দূরেই চরশৌলমারী ডিগ্রি কলেজ ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এছাড়াও ওই এলাকায় রয়েছে ৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব প্রতিষ্ঠানের হাজারও শিক্ষার্থী চলাচল করেন।

চরশৌলমারী ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম, আয়নাল হক, খোরশেদ আলম ও জেল হকসহ অনেকে জানান, সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় তারা অনেক কষ্টে আছেন। এখন নিজেদের তৈরি বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে। তাদের অভিযোগ, সেতুটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অপরিকল্পিতভাবে হওয়ায় এক বছরেই ভেঙে যায়।

চরশৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএইচএম সাইদুর রহমান বলেন, ওই সময় অপরিকল্পতভাবে ও পাইলিং ছাড়া সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ফলে নির্মাণের এক বছর পরেই ভেঙে যায়। জনদুর্ভোগ কমাতে ওই জায়গায় একটি টেকসই সেতু নির্মাণ করা জরুরি।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মনিরুল ইসলামের মালিক মনিরুল ইসলাম বলেন, সেতুটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি। সেতুটির পাশে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করায় তা ভেঙে গেছে।

রৌমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মেশকাতুর রহমান জানান, বিষয়টি তিনি অবগত আছেন এবং কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) যুবায়েত হোসেন বলেন, ওই জায়গায় একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে নির্মাণ করা হবে।

ইত্তেফাক/এসকে