শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১৭ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

রাজশাহীতে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার

আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১৯:০৩

রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ শেষের আগেই বিভাগীয় পরিবহন মালিক সমিতির ডাকা অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টায় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা শেষে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও বিভাগীয় পরিবহন মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ শুরুর পূর্বনির্ধারিত সময় ছিল দুপুর ২টায়। তবে নির্ধারিত সময়ের অন্তত ৪ ঘণ্টা আগেই গণসমাবেশের মঞ্চে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দিতে শুরু করেন। তারও অন্তত ৪ ঘণ্টা আগে ভোর ৬টায় পুলিশের উপস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) থেকে পাশের হযরত শাহ্ মখদুর (রহ.) কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান ও আশেপাশের রাস্তায় অবস্থান নেওয়া বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত হাজার হাজার বিএনপির নেতাকর্মী গণসমাবেশস্থলে আসেন। ফলে চাপের মুখে পড়ে নেতৃবৃন্দ পূর্বনির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই গণসমাবেশে বক্তৃতা শুরু করতে বাধ্য হন। 

ছবি: আজাহার উদ্দিন

এদিকে গণসমাবেশ শেষের কথা ছিল বিকেল ৫টায়। তার ঠিক আধাঘণ্টা আগেই গণসমাবেশের প্রধান অতিথি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার বক্তব্য শেষ করেন। অন্যদিকে তারও প্রায় একঘণ্টা আগেই বিভাগীয় পরিবহন মালিক সমিতির ডাকা পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়। শনিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত তৃতীয় দিনের মতো বিভাগজুড়ে চলছিল পরিবহন ধর্মঘট। 

পরিবহন মালিক নেতা মতিউল হক টিটো জানান, দীর্ঘ দিন ধরে ১০ দফা দাবিতে তারা আন্দোলন করছিলেন। গত ২৭ নভেম্বর তারা বিভাগীয় কমিশনারকে দাবির কথা বলেছিলেন। শনিবার বেলা ৩টায় কমিশনার তাদের ডেকেছিলেন। সেখানে যৌথ সভায় বিভাগীয় কমিশনার ১০ দফা দাবির মধ্যে তার আয়ত্তে থাকা দাবি এক মাসের মধ্যে বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন। আর আইন সংশোধনীর বিষয়গুলো লিখিতভাবে তিনি মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন। এরপর ঢাকার কোচসহ সব জেলায় গাড়ি চলাচল করে। এদিকে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণার পরপরই বাসের কাউন্টার খোলা হয়।

ছবি: আজাহার উদ্দিন

উল্লেখ্য, গত ২৬ নভেম্বর মহাসড়কে নছিমন-করিমন-ভটভটিসহ অবৈধ যান চলাচল বন্ধ করতে ১০ দফা দাবিতে ১ ডিসেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘটের আল্টিমেটাম দেয় সংগঠনটি। দাবি পূরণ না হওয়ায় ৩০ নভেম্বর বিকেলে ১ ডিসেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়। মূলত ওই ঘোষণার আগেই রাস্তা থেকে বাস-কোচ উধাও হয়ে যায়। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিপাকে পড়েন। 

এছাড়া বিএনপির গণসমাবেশের শুরুর আগের দিন শুক্রবার দুপুরে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ত্রি-হুইলার ধর্মঘট শুরু হয়। 

তবে বিএনপির দাবি, অন্যান্য জায়গার মতো রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশে লোকসমাগম ঠেকাতে ক্ষমতাসীন দলের হস্তক্ষেপে পরিবহন মালিকেরা এই ধর্মঘট ডাকে। যদিও বিএনপির অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছিলেন পরিবহন মালিকেরা।

ইত্তেফাক/এএএম