ইরান হিজাব আইন প্রত্যাহার করার ইঙ্গিত দিয়েছে। হিজাব আইনে কোনো পরিবর্তন করা যায় কি না তা আইন ও বিচার বিভাগ যৌথভাবে খতিয়ে দেখছে। হিজাব বিরোধী আন্দোলনের দুই মাস পর ইরানের অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মনতাজেরি এ তথ্য দিয়েছেন। গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তবে হিজাব আইনে কী ধরনের পরিবর্তন করা যেতে পারে তা স্পষ্ট নয়। অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন, গত বুধবার (৩০ নভেম্বর) দুই বিভাগের একটি যৌথ প্রতিনিধি দল সংসদের সাংস্কৃতিক কমিশনের সঙ্গে দেখা করে। হিজাব আইনে পরিবর্তন নিয়ে তাদের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দেশের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি জানিয়েছিলেন, ইরানের গণতন্ত্র ও ইসলামী প্রতিষ্ঠানগুলো সাংবিধানিকভাবে শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। তবে একই সঙ্গে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের সংবিধান পরিবর্তন করা সম্ভব বলে দাবি করেন তিনি।
অনেকেই মনে করেছিলেন যে প্রেসিডেন্টের বার্তা সম্ভাব্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। যাইহোক, ইরানে হিজাব আইন কতটা শিথিল হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। যেহেতু দেশটি একটি গোঁড়া ও রক্ষণশীল ইসলামী শাসন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
গত দুই মাস ধরে ইরানে হিজাব বিরোধী আইন নিয়ে তোলপাড় চলছে। ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের কুর্দি অঞ্চলের বাসিন্দা ২২ বছর বয়সী মাহশা আমিনিকে সে দেশের নিতি পুলিশ গ্রেপ্তার করে। মাহশার অপরাধ ছিল, তিনি ঠিক করে হিজাব পড়েননি। পুলিশ হেফাজতে মাহশার রহস্যজনক মৃত্যু হয়।
এরপর সে দেশের নারীরা হিজাব খুলে চুল কেটে তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন শহর ও শহরে রক্ষণশীল ইসলামী শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মিছিল করে। প্রতিবাদের ক্ষোভ ফুটবল মাঠেও পৌঁছে যায়। বিশ্বকাপের প্রথম খেলায় জাতীয় সঙ্গীতে যোগ দেননি সে দেশের খেলোয়াড়রা।
বিশ্বকাপের গ্যালারিতে দেখা যায়, মাহশা আমিনীর নাম লেখা জার্সি পরে নীরবে প্রতিবাদ করছেন সে দেশের তরুণীরা। আন্তর্জাতিক মঞ্চেও ইরানকে কোণঠাসা করা হয়। এতদিন পর তেহরান প্রশাসন হিজাবের বিষয়ে তার অবস্থান থেকে সরে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৩ সালের পর সে দেশের আইন অনুযায়ী প্রত্যেক মেয়েকে হিজাব দিয়ে মাথা ঢেকে রাখতে হয়। হিজাব না পরলে বা ঠিক ভাবে না পরলেও ইরানের সেনা ও নীতি পুলিশ এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে।