মস্কো পাকিস্তানের কাছে অশোধিত তেল, পেট্রোল ও ডিজেল ছাড়ের দামে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশটির জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রী মুসাদিক মালিকের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যম ডন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জ্বালানি তেল ও গ্যাসসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে সম্প্রতি রাশিয়ায় গিয়েছিলেন মুসাদিক মালিক। ফিরে এসে সোমবার (৫ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'আমাদের রাশিয়া সফর থেকে আমরা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পেয়েছি। রাশিয়া ছাড়ের দামে অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করতে সম্মত হয়েছে। তারা আমাদের কম দামে পেট্রোল এবং ডিজেলও দেবে।'
পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার মাসখানেক আগেই জানিয়েছিলেন, রাশিয়ার কাছ থেকে কম দামে জ্বালানি কেনার কথা ভাবছে পাকিস্তান। সে সময় তিনি ভারতের প্রসঙ্গ তুলে জানিয়েছিলেন, ইসলামাবাদেরও অধিকার আছে মস্কো থেকে এই সুযোগ নেওয়ার।
এদিকে এক সংবাদ সম্মেলনে মুসাদিক মালিক জানান, রাশিয়া পাকিস্তানে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করতে আগ্রহী। এ লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে দুইটি পাইপলাইন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তার মধ্যে একটি 'পাকিস্তান স্ট্রিম'। এছাড়া রাশিয়া থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য দেশের কয়েকটি বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
আসছে শীতে গ্যাসের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে পাকিস্তান। এছাড়া তেলসহ বিভিন্ন জ্বালানির আমদানি মূল্য পরিশোধ করতে গিয়ে ইসলামাবাদের অবস্থার অবনতি হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার কাছ থেকে কম দামে জ্বালানি তেল পাওয়া পাকিস্তানের দুর্বল অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রাশিয়ান জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল ইউরোপীয় দেশগুলো।
তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। মস্কোর ওপর জ্বালানি নির্ভরতা শূন্যের কোঠায় আনতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ইউরোপ। রাশিয়া থেকে তেল আমদানিও বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এরই মধ্যে ভারত ও চীনের কাছে কম দামে তেল বিক্রি শুরু করে রাশিয়া। উভয় দেশই এখন রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা।