শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৮ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ইন্দোনেশিয়ায় বিয়ে ছাড়া যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ

আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ১৪:৪৫

ইন্দোনেশিয়ার পার্লামেন্ট বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্কে একটি নতুন আইন পাস করেছে। এখন থেকে বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম দেশে বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হবে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আইনের উল্লেখযোগ্য সংশোধনীর মধ্যে রয়েছে বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্কের জন্য এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, প্রেসিডেন্টকে অপমান করা এবং প্যানকাসিলা নামে পরিচিত জাতীয় আদর্শের পরিপন্থী মতামত প্রকাশ করা।

আইনটি তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আইনপ্রণেতা বামবাং উরুয়ান্তো জানান, ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকদের পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়ায় আসা বিদেশিদের ক্ষেত্রেও নতুন আইন প্রযোজ্য হবে। তবে, যদি কেউ স্বেচ্ছায় বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হন তিনি এই আইনের আওতায় পড়বেন না। অভিযুক্তের স্বজনরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে অভিযোগ করলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকদের পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়ায় আসা বিদেশিদের ক্ষেত্রেও নতুন আইন প্রযোজ্য হবে।

যদি কারো স্ত্রীর সঙ্গে অন্য কোনো পুরুষ বা নারীর যৌন সম্পর্ক থাকে, তাহলে নির্যাতিতাও পুলিশে অভিযোগ জানাতে পারেন। অন্যদিকে অবিবাহিতদের ক্ষেত্রে তাদের অভিভাবক প্রধান সাক্ষী হিসেবে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।

ইন্দোনেশিয়ায় বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের আইনটি ২০১৯ সালে পার্লামেন্টে প্রথম প্রস্তাব করা হয়েছিল। সে বছর অনেকেই এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে স্থবির হয়ে পড়ে দেশটির রাজধানী জাকার্তা।

ইন্দোনেশিয়ায় বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের আইনটি ২০১৯ সালে পার্লামেন্টে প্রথম প্রস্তাব করা হয়েছিল।

সে সময়ের খসড়া আইনে শুধু বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা বলা হয়নি। জাতীয় পতাকা ও প্রেসিডেন্টের অবমাননার শাস্তির পাশাপাশি গর্ভপাতের শাস্তিও ছিল চার বছরের কারাদণ্ড, যদিও এখন তা বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে।

তবে দেশটির আচেহ প্রদেশে আগে থেকেই এসব বিধান ছিল। সেখানে প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের মেলামেশা, যৌন মিলন ও মদ্যপান করলে বেত্রাঘাত করা হয়।

প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের মেলামেশা, যৌন মিলন ও মদ্যপান করলে বেত্রাঘাত করা হয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, দেশের অনেকে আইনটিকে স্বাগত জানালেও ব্যবসায়ীরা এটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, এ ধরনের আইন পাস হলে ইন্দোনেশিয়াকে অন্যভাবে দেখবে গোটা বিশ্ব। যা পর্যটন খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

ইন্দোনেশিয়ার উপ-আইনমন্ত্রী অ্যাওয়ার্ড ওমর শরিফ হিয়ারিয়েজ গণমাধ্যমকে জানান, কয়েক দশক ধরে আইনটি তৈরি করা হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর নতুন ফৌজদারি কোড পাস হতে পারে। ইন্দোনেশিয়ার মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আইনটি প্রণয়ন করতে পেরে তারা গর্বিত। এর মাধ্যমে কিছু গুরুতর অপরাধ দমন করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইন্দোনেশিয়ার কিছু ইসলামী সংগঠন খসড়া আইনের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছে।

এদিকে ইন্দোনেশিয়ার কিছু ইসলামী সংগঠন খসড়া আইনের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছে। তবে বিরোধীরা জানিয়েছেন, আইনটি ইন্দোনেশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট সুহার্তোর পতনের পর ১৯৯৮ সালে কার্যকর হওয়া উদারপন্থী সংস্কার থেকে একটি প্রস্থান।

ইত্তেফাক/ডিএস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন