যৌন হয়রানির অভিযোগে যশোরের মনিরামপুরে নিহার রঞ্জন রায় নামে এক প্রধান শিক্ষিককে জুতাপেটা করেছে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। রোববার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটেছে উপজেলার দেলুয়াবাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। ঘটনার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ওই বিদ্যালয়ের সরকারী শিক্ষিকা অফিস কক্ষে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে গিয়ে খাতা না পেয়ে পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ করেন। দুপুর একটায় পরীক্ষা শেষে শিক্ষিকা আবারও প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে ঢুকে হাজিরা খাতা চান। এ সময় প্রধান শিক্ষক খাতা না দিয়ে ওই শিক্ষিকার গায়ের ওড়না ধরে টান দেন। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শিক্ষিকা পায়ের জুতা দিয়ে প্রধান শিক্ষককে মারপিট করেন।
সহকারী শিক্ষিকা অভিযোগ করে জানান, প্রধান শিক্ষক নিহার রঞ্জন রায় তাকে বহুদিন ধরে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় তাকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছিলেন। ঘটনার দিন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে গেলে অফিস কক্ষে কেউ না থাকার সুযোগে প্রধান শিক্ষক তার গায়ের ওড়না ধরে টান দেন। রাগে ক্ষোভে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে তিনি প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করেছেন।
সহকারী শিক্ষিকা আরও জানান, প্রধান শিক্ষকের অনৈতিক কর্মকাণ্ড কমিটিকে জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এরপরও প্রধান শিক্ষকের হাত থেকে রক্ষা পেতে চলতি বছরের ১৪ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
খবর পেয়ে মনিরামপুর থানা পুলিশ এএসআই আব্দুর রাজ্জাক ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ বিষয়ে মনিরামপুর থানার ওসি শেখ মনিরুজ্জামান জানান, বিদ্যালয় থেকে ফোন পাওয়ার পর পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্কুল কমিটির সভাপতি আনিসুর রহমান তযু জানান, বিষয়টি কমিটির সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এছাড়া প্রধান শিক্ষক নিহার রঞ্জনকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন।