বিজয়ের মাসে বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ সব ছবি নিয়ে সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশন ও সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই)-এর যৌথ আয়োজনে বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) শুরু হতে যাচ্ছে আট দিনের আলোকচিত্র প্রদর্শনী। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের শোষণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের কিছু দুর্লভ ছবিও স্থান পেয়েছে ‘উইটনেসিং হিস্ট্রি ইন দ্য মেকিং: ফটোগ্রাফস বাই অ্যান ডি হেনিং’ শীর্ষক এই প্রদর্শনীতে।
ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর চলবে এই প্রদর্শনী। যা উন্মুক্ত থাকবে সর্বসাধারণের জন্য। এই প্রদর্শনীর বিশেষ আয়োজনে উপস্থিত থাকবেন ফরাসি ফটোগ্রাফার অ্যান ডি হেনিং নিজেই।
অবশ্য এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আলোচনায় এসেছে অ্যান ডি হেনিংয়ের আলোকচিত্রগুলো। ফোর্বস ম্যাগাজিনে এই প্রদর্শনিকে ‘সো ইনটেন্স, সো ফ্রেজাইল’ হিসেবে বর্ণনা করে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রদর্শনীটি ফ্রান্সে আন্তর্জাতিক দর্শকদের কাছও ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে।
মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছেন অ্যান ডি হেনিং। যুদ্ধক্ষেত্রের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে তার প্রতিটি ছবিতে। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা থেকে শুরু করে স্থান করে নিয়েছে নারী-পুরুষ-শিশু, নিজ গ্রামের বাড়ি-ঘর ছেলে শরণার্থী হিসেবে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালে আরও একবার বাংলাদেশে আসেন অ্যান ডি হেনিং। মূলত পাকিস্তানের শোষকদের বিরুদ্ধে লড়াই করে বাংলাদেশের মুক্তি ও স্বাধীনতা এনে দেওয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখতে এই সফর ছিলো তার। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে পরিবারের অধিংকাংশ সদস্যের সঙ্গে হত্যার পর সেই পাকিস্তানপন্থি গোষ্ঠী ধীরে ধীরে বাংলাদেশ থেকে তার সকল ছবি মুছে ফেলার চেষ্টা করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রঙিন ছবিগুলোর মধ্যে কিছু ছবি ছিলো অ্যান ডি হেনিংয়ের কাছে।
প্রদর্শনী নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র এবং সিআরআই-এর ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক বলেন, ‘উপমহাদেশের এমন একজন নেতা ছিলেন যিনি তার দেশকে প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক এবং সকলের সমান অধিকারের ভিত্তিতে স্বাধীন করতে চেয়েছিলেন। বাংলাদেশের সকলে তার এই দাবির পক্ষে একাত্মতা প্রকাশ করে।
স্বাধীনতার পর আয়োজিত আওয়ামী লীগের প্রথম জাতীয় সম্মেলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখতে উপস্থিত ছিলেন অ্যান ডি হেনিং। তিনি বলেন, কলকাতা থেকে শুধুমাত্র এই ইভেন্টের ছবি তোলার জন্য আমি সে সময় ঢাকায় আসি। যদিও সে সময় অ্যান ডি হেনিং সাদা-কালো ছবি তুলতেন। কিন্তু সম্মেলনে সাদা-আকাশী রঙের ছটা দেখে রঙিন ছবি তোলেন এই ফটোগ্রাফার।