শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বার্ষিক পরীক্ষায় স্থানীয় চেয়ারম্যানকে নিয়ে সৃজনশীল প্রশ্ন!

আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১৪:৪৭

তাড়াশের রানীহাট সিরাজগঞ্জ বাজার দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষায় অষ্টম শ্রেণির প্রশ্নপত্রে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেককে নিয়ে সৃজনশীল প্রশ্ন করা হয়েছে। এ পরীক্ষা গত নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয়। ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখে ফলাফল দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) চেয়ারম্যানকে নিয়ে প্রশ্নপত্রের বিষয়টি নজরে আসার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এরপর থেকে লোকজনের মধ্যে নিন্দার ঝড় বইছে।

প্রশ্নপত্রের উদ্দীপকে বলা হয়েছে, ‘আব্দুল খালেক সাহেব তালম ইউনিয়নের একজন বাসিন্দা। তিনি ২০০১ সালে একটি স্থানীয় সরকারের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি এলাকাবাসীর বিশুদ্ধ পানির সমস্যা দূর করার জন্য তার এলাকায় ২৫টি নলকূপ স্থাপন, রাস্তাঘাট সংস্কার ও নির্মাণ এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করেন। ইতোমধ্যে তিনি তার এলাকায় একজন জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।’

‘ক. বাংলাদেশে জেলা পরিষদের সংখ্যা কত? খ. জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস’ ব্যাখ্যা কর? গ. আব্দুল খালেক সাহেব কোন ধরনের স্থানীয় সরকারের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ব্যাখ্যা কর? গ. আব্দুল খালেক সাহেবকে চেয়ারম্যান হিসেবে উল্লেখিত দায়িত্ব ছাড়াও আরও অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়, বক্তব্যটির যথার্থতা নিরুপণ কর?’

ফেসবুকে একজন প্রশ্নপত্রের কপিসহ লিখেছেন, ‘এরা কারা, কোথা থেকে ও কীভাবে শিক্ষকতা পেশায় এসেছেন? এদের জন্য জাতি লজ্জিত। ম্যাধ্যমিকের বার্ষিক পরীক্ষায় স্থানীয় চেয়ারম্যানের নামে প্রশ্নপত্র করা হয়েছে। নৈতিকতার কতখানি অবক্ষয় হলে মানুষ এত নীচে নামতে পারে!’

হাসেম সরকার নামে একজন লিখেছেন, ‘গিনেস বুকে নাম লেখাবেন মনে হয়। একজন চেয়ারম্যানের নাম দিয়ে প্রশ্ন করা হয় আমার জীবনে এই প্রথম দেখলাম।’

হেদায়েতুল ইসলাম শুভ নামে একজন লিখেছেন, ‘একজন অভিনেতা থেকে জননেতা। জননেতা থেকে প্রশ্ন নেতা। এটাই সৃজনশীলতা।’

এ বিষয়ে তালম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক বলেন, রানীহাট সিরাজগঞ্জ বাজার দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষায় অষ্টম শ্রেণির প্রশ্নপত্র আমাকে নিয়ে করা হয়েছে, সে বিষয়টি আমিও জানতাম না।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এস এম সোহেল রানা বলেন, আমি পরীক্ষার সময়কালীন সভাপতি ছিলাম না। পদাধিকার বলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দায়িত্বে ছিলেন।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মমিন বলেন, প্রশ্নপত্রের জন্য আমি তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করে দিয়েছিলাম। সদস্যদের মধ্যে একজন চেয়ারম্যানের আত্মীয় ছিলেন। তিনি চেয়ারম্যানকে খুশি করতে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ফকির জাকির বলেন, আমি অবাক হয়েছি। এর আগে এমন ঘটনা দেখিনি।

এ প্রসঙ্গে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজি সলিম উল্লাহ দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, সৃজনশীল প্রশ্ন করার কিছু বৈশিষ্ট রয়েছে। সেগুলো যাচাই করে বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইত্তেফাক/এসকে