কানাডায় দৈনিক ইত্তেফাকের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে কানাডার অটোয়া, মন্ট্রিয়ল, ভ্যাংকুভার এবং টরন্টো থেকে লেখক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবীরা শুভেচ্ছা জানান। তারা ইত্তেফাকের লেখক ও পাঠক হিসেবে নানা স্মৃতিচারণ করেন।
ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন বলেন, ১৯৭২ সালে ইত্তেফাকের কচি-কাঁচার আসরে জীবনের প্রথম ছড়াটি প্রকাশের মাধ্যমেই আমার ছড়া যাত্রা শুরু হয়েছিল। তারপর লেখক হিসেবে আমার বিকশিত হবার সোনালি সময়টায় ইত্তেফাকের অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি। ইত্তেফাকের প্রতি আমার ঋণের শেষ নেই। ৭০তম জন্মদিনে ইত্তেফাকের জন্যে তিন উল্লাস।
দৈনিক বাংলার (অধুনালুপ্ত) প্রাক্তন সিনিয়র সাব-এডিটর ও শিফট ইনচার্জ সুমন রহমান বলেন, ৭০ বছর ধরে ইত্তেফাকের চোখ দিয়ে আমরা দেখে আসছি টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত জনপদের আশা-আকাঙ্খা, আনন্দ-বেদনা ও দ্রোহের প্রবহমান জীবন। আমাদের মতো পাঠকের চোখে ছানি পড়লেও ইত্তেফাকের কালজয়ী এ চোখে কখনোই ছানি ও ঠুলি পড়ে না। আর যেন না পড়ে। ইত্তেফাকের চোখ সদা জাগ্রত থাক।
অভিনন্দন জানিয়ে বিটিভির আইন আদালতখ্যাত এবং অধুনালুপ্ত এখনই সময়ের সম্পাদক ব্যারিস্টার রেজাউর রহমান বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও জনগণের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে ইত্তেফাক পত্রিকার অপরিসীম অবদান কৃতজ্ঞতা ও আনন্দের সঙ্গে স্মরণ করি। সে সময় পাকিস্তানি স্বৈরশাসকদের নিপীড়ন ইত্তেফাকের কণ্ঠরোধ করতে পারেনি।
ইত্তেফাকের সাহসী সাংবাদিক, সম্পাদক, লেখক এবং বুদ্ধিজীবীরা সব সময় বাঙালির অধিকারের পক্ষে ও স্বৈরশাসনের অবসানের জন্য সোচ্চার। আগামীতেও ইত্তেফাক গণতন্ত্রের পক্ষে এবং সকল অন্যায়ের বিপক্ষে আপোষহীন অবস্থান অক্ষুন্ন রাখবে, সেই প্রত্যাশা সব সময়ের।
চিত্রশিল্পী, কবি রাকীব হাসান বলেন, আমার জীবনের দৈনিক পত্রিকা বলতে ‘ইত্তেফাক’ বুঝি। সেই ১৯৭২ সালে জানুয়ারিতে আব্বার সঙ্গে বরিশাল যাচ্ছি লঞ্চে, আব্বা ইত্তেফাক কিনে পড়ছেন, আর আমি দেখেছিলাম জীবনের প্রথম জ্ঞান-ভাণ্ডারের মুখ! ইত্তেফাক নামের সেই দৈনিক ছিল আসলে প্রতিদিনের বাংলাদেশের চেহারা, আমি তাকে মনে রাখবো আমৃত্যু! তারপর দৈনিক ইত্তেফাক ছিল আমাদের নিত্যদিনের জীবন আপডেট করার একমাত্র সোর্স, বহু সময় চলে গেছে, বহু বদল আমাদের বদলে দিয়েছে, ইত্তেফাক এখনও আমাদের অন্যতম দৈনিক, তার জন্য সকল বাঙালির মতো আমারও শুভকামনা।
কবি ও অনুবাদক শাহানা আক্তার মহুয়া বলেন, সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ। বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো দৈনিক পত্রিকা 'ইত্তেফাক'র দর্পণে সবসময় প্রতিফলিত হয়ে আসছে প্রিয় বাংলাদেশ। জন্মলগ্ন থেকে বাংলাদেশের স্বাধীন জাতি এবং রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার ভূমিকা রেখেছে সংবাদপত্রটি। তাই বলা যায়, বাংলার স্বাধীনতার সাথে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে গণমানুষের মুখপত্র 'ইত্তেফাক'।
সাংবাদিক মাহবুব ওসমানী বলেন, ঐতিহ্যবাহী ইত্তেফাক বাঙালির অহংকার, ইত্তেফাক বাংলাদেশের গর্ব। দেশের এই প্রাচীনতম দৈনিকটি বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে উঠেছে।
ইত্তেফাকের কানাডার বিশেষ প্রতিনিধি সাংবাদিক সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলালের মাধ্যমে ইত্তেফাক কানাডাতেও জনপ্রিয়। কারণ, কানাডার নানান খবর এবং প্রবাসী বাঙালিদের যত্ন সহকারে প্রকাশ পায়। ফলে প্রবাসীদের কাছে ইত্তেফাক নন্দিত। হ্যাপি বার্থ দে টু ইত্তেফাক।