সম্প্রতি ইউক্রেনের মিসাইল হামলায় অন্তত ৮৯ জন রুশ সেনার মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দেশের ভেতরে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
নববর্ষের দিন ইউক্রেনে ড্রোন হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। পাল্টা জবাবে মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) পূর্ব ইউক্রেনের দনেৎস্ক অঞ্চলে রাশিয়ার দখলে থাকা ইউক্রেনের জমি মাকিইভকায় আক্রমণ চালায় জেলেনস্কির সেনা। তাতে রাশিয়ার অন্তত ৮৯ জন সেনা নিহত হয়েছেন।
দেশবাসীর চাপে ক্রেমলিন বাধ্য হয়েছে ওই মৃত্যুর খবর প্রকাশ করতে। প্রকাশ্যে ওই সেনাদের জন্য প্রার্থনাও হয়েছে রাশিয়ায়। ইউক্রেন যুদ্ধে এখনো পর্যন্ত কতজন রাশিয়ার সেনার মৃত্যু হয়েছে, তা স্পষ্ট করেনি রাশিয়া।
একেবারে গোড়ার দিকে দুই একবার সংখ্যা বললেও, গত কয়েকমাসে এ বিষয়ে কখনো কোনো মন্তব্য করেনি রাশিয়া। তবে মঙ্গলবার তারা সেনা মৃত্যুর কথা বলতে বাধ্য হয়েছে।
আমেরিকার দেওয়া হাইমার রকেট নিয়ে মাকিইভকায় আক্রমণ চালায় ইউক্রেন। সেখানে একটি ভোকেশনাল স্কুল বিল্ডিংয়ে ক্যাম্প তৈরি করে ছিলেন রাশিয়ার সেনা। বস্তুত, ওই অঞ্চলটি এখনো রাশিয়ার দখলে। এলাকায় একাধিক ক্যাম্প তৈরি করে রেখেছে রুশ সেনা।
মঙ্গলবার সেখানেই রকেট হামলা চালায় ইউক্রেন। স্কুল বাড়িটি ভেঙে পড়ে। প্রাথমিকভাবে রাশিয়া জানিয়েছিল ৬৩ জন সেনার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু পরে জানানো হয় ৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে রাশিয়ার ভিতরেই তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। রুশ জাতীয়তাবাদীরা একের পর এক ব্লগ লিখছেন। যেখানে এই মৃত্যুর জন্য ক্রেমলিনকে দায়ী করা হচ্ছে। রাশিয়ার সেনা ইউক্রেন যুদ্ধ পর্যুদস্ত হচ্ছে বলে বার বার অভিযোগ করা হচ্ছে।
বস্তুত, কোনো কোনো ব্লগে নিহতের সংখ্যা শতাধিক বলে দাবি করা হচ্ছে। ইউক্রেনও তেমনই দাবি করেছে। ইউক্রেন জানিয়েছে, অন্তত ৪০০ জন রুশ সেনার মৃত্যু হয়েছে। আহত অন্তত ৩০০। যদিও এই তথ্য স্বাধীন সূত্র থেকে পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
রাশিয়ার জাতীয়তাবাদীদের বক্তব্য, রুশ সেনার হাইকম্যান্ড যুদ্ধে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তাদের বক্তব্য, রাশিয়ার সেনার সংখ্যা যথেষ্ট হলেও তাদের ঠিকমতো ব্যবহার করা যায়নি। এবং সে কারণেই ইউক্রেনের আক্রমণে রাশিয়ার সেনার এতটা ক্ষতি হচ্ছে।
রাশিয়ার সেনারা মোবাইল ব্যবহার করছিলেন বলেও অভিযোগ। সেই মোবাইল ট্র্যাক করেই ইউক্রেন আক্রমণ চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কেন তারা মোবাইল ব্যবহার করছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
রাশিয়ার একটি সূত্র সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে, ওই স্কুল বাড়িতে প্রচুর গোলাবারুদ মজুত করা হয়েছিল। যার জেরে বিরাট বিস্ফোরণ হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, আরো একবার প্রমাণ হলো, রাশিয়া ইউক্রেনে হেরে যাচ্ছে। তবে রুশ বাহিনী ইরানের তৈরি ড্রোন নিয়ে ক্রমাগত আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে বলে এদিন ফের অভিযোগ করেছেন জেলেনস্কি।