শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ১১ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

২০৪ কোটি টাকার অর্থ পাঁচার মামলা: আসামিকে পুলিশে সোপর্দ হাইকোর্টের

আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ২০:২১

জারি ছিলো নিম্ন আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা। এমনকি উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ছিলো আসামিকে গ্রেফতারের। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করতে পারেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টির আড়ালে থেকেই তৃতীয়বার হাইকোর্টে হাজির হন ২০৪ কোটি টাকার অর্থ পাঁচার মামলার আসামি আবু আহাম্মদ ওরফে আবু। যিনি ‘গ্লোডেন আবু’ নামেই পরিচিত। 

রোববার (৮ জানুয়ারি) উচ্চ আদালতে হাজির হয়ে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের জন্য এক সপ্তাহ সময় চান। হাইকোর্ট ধুরন্ধর এই আসামির বক্তব্যকে বিশ্বাসে নিতে পারেনি। কারণ এর আগেও হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করে আগাম জামিন চেয়ে পালিয়ে যায় এই আসামি।

আসামির উদ্দেশ্যে হাইকোর্ট বলেন, আপনার অনেক পরামর্শদাতা রয়েছে। সময় দিলে আপনি পরামর্শদাতাদের পরামর্শকে কাজে লাগিয়ে আবার পালিয়ে যেতে পারেন। এ কারণে আপনাকে সম্মানের সহিত পুলিশের কাছে সোপর্দ করছি। এরপরই আদালত ওই আসামিকে শাহবাগ থানা পুলিশের হাতে তুলে দেন। একইসঙ্গে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রামের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে তাকে হাজির করতে নির্দেশ দেয়া হয়। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এই আদেশ দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে খুরশীদ আলম খান, রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক এবং আসামি পক্ষে মো. হাবিবুর রহমান ও এসএম আবুল হোসেন শুনানি করেন।

প্রসঙ্গত ২০৪ কোটি টাকা অর্থ পাঁচারের মামলায় গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আসামি আবুকে তিন সপ্তাহের মধ্যে চট্টগ্রামের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলো। এই আদেশের পর আসামি আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। কিন্তু নথি না আসা, শারীরিক অসুস্থতাসহ নানা কারণ দেখিয়ে সময় আবেদন করে নিম্ন আদালতে নয় মাস সময়ক্ষেপণ করে আসামি। পরে জামিন আবেদন খারিজ করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে চট্টগ্রামের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত।

এই অবস্থায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি গোপন রেখে গত ৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টে দ্বিতীয়বার আগাম জামিন চান আবু। আসামির উপস্থিতিতে জামিন আবেদনের শুনানি শেষে পরদিন আদেশের জন্য দিন ধার্য ছিলো। কিন্তু আদেশদানের সময় ওই আসামি হাইকোর্টে হাজির হননি। এমন পরিস্থিতিতে আসামি যাতে বিমানবন্দর ও স্থল বন্দর দিয়ে দেশত্যাগ না করতে পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় আদালত। একইসঙ্গে আসামিকে দ্রুত গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। 

আদালত বলেন, যখন জামিন শুনানি চলছিলো তখন আসামির মুভমেন্ট দেখেই আমাদের সন্দেহ হয়েছিলো যে তার মধ্যে ঘাপলা আছে। এ ধরনের লোক যত সৃষ্টি হবে সমাজ ততই বিপদসংকুল হয়ে পড়বে। অতএব সমাজে যাতে সৎ ও ভালো লোক সৃষ্টি হয় ততই মঙ্গলজনক।

এই নির্দেশের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোঁখ ফাঁকি দিয়ে এক মাস পলাতক থেকে গতকাল রবিবার আবার হাইকোর্টে হাজির হন আসামি আবু। এরপরই হাইকোর্ট তাকে সরাসরি শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দের নির্দেশ দেয়। 

ইত্তেফাক/এমএএম