কুড়িগ্রামে শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে জনজীবনে দুর্ভোগ বেড়েছে। মঙ্গলবার কুড়িগ্রাম জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র শীতের দাপটে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষজন। ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় কাজে বের হতে পারছেন না শ্রমজীবীরা। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ নানা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা।
কুড়িগ্রাম হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে গড়ে ১ হাজার ৫০০ রোগী। কুড়িগ্রাম ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১২টি বেডের বিপরীতে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন ৩৮ জনের মধ্যে ৩৩ জনই শিশু। শিশু ওয়ার্ডে ৪৮টি বেডের বিপরীতে চিকিৎসা নিচ্ছে ৬২ জন শিশু। এছাড়াও সাধারণ ওয়ার্ডে ৭৮টি বেডের বিপরীতে চিকিৎসা নিচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ রোগী। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও বেড়েছে রোগীর চাপ।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. শাহিনুর রহমান শিপন জানান, শীতের শুরু থেকেই হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। তবে আমরা স্বল্প জনবল নিয়ে এই রোগীর চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্র জানায়, গত ৮ জানুয়ারি থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত কুড়িগ্রাম জেলার তাপমাত্রা অবস্থান করেছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। গত ১৬ জানুয়ারি তাপমাত্রা একটু উচ্চগামী থাকলেও মঙ্গলবার সকাল ৬টা ও সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, কুড়িগ্রামে শীতার্ত মানুষের মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৮ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও নতুন করে আরো ২৫ হাজার কম্বল বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, রাজারহাটে দিন দিন শীতের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না। ভোগান্তি বাড়াচ্ছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের। সবচেয়ে কষ্টে আছেন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষ। ঠাণ্ডাজনিত রোগে ভুগছেন শিশু ও প্রবীণ ব্যক্তিরা।
উপজেলা কৃষি ও আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তুহিন মিয়া জানান, মঙ্গলবার সকালে এ অঞ্চলে ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ইতিমধ্যে ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে প্রতিটি ইউপিতে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরো প্রায় ২ লাখ টাকার কম্বল কেনা হয়েছে তা অতি দ্রুত শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।