‘স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে ৪৮ বছর আগে ঘর ছেড়েছিলাম। বাড়ি থেকে বেরিয়ে ভারতে চলে যাই। ওই সময় ৬ মাসের ছেলেকে রেখে যাই। পরবর্তীতে স্ত্রী সন্তানের খোঁজখবর নিয়েও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। দীর্ঘ বছর পর ছেলেকে পেয়ে অনেক খুশি হয়েছি। বর্তমানে তিনি ভারতের নাগরিক। ভারতে গিয়ে তিনি আবারও বিয়ে করেন এবং সেখানে তার চার সন্তান রয়েছে।’ এভাবে স্মৃতিচারণ করেন আমজদ আলী।
জানা গেছে, ৯ জানুয়ারি ভারত থেকে স্ত্রী ও সন্তানের খোঁজে ময়মনসিংহে আসেন আমজদ আলী। এরপর কালা মিয়ার মোবাইল ফোনে ময়মনসিংহ থেকে কল দেন এক আত্মীয়। ওই আত্মীয় জানান, কালা মিয়ার খোঁজে তার বাবা দেশে এসেছেন। এ খবর পেয়ে রাতেই কালা মিয়া সপরিবারে ময়মনসিংহ রওয়ানা হন।
দীর্ঘ ৪৮ বছর পর জন্মদাতা পিতাকে চোখের সামনে দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন কালা মিয়া। বাবা বলে ডেকে জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ কাঁদেন। তার বাবাও ছেলেকে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়েন। এরপর কালা মিয়া বাবাকে নিয়ে ফেরেন সিলেটে। তিনি এখন তার মাকে ফিরে পেতে চান।
কালা মিয়া বলেন, মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে গিয়েছিলেন বাবা মো. আমজদ আলী। তখন তার বয়স মাত্র ৬ মাস। দীর্ঘ ৪৮ বছর পর ফিরে এসেছে তার বাবা।
কালা মিয়া আরও জানান, তিনি বড় হওয়ার পর শুনেছেন মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাবা চলে গেছেন ভারতে। বয়স যখন ৮ তখন তার মাকেও হারান তিনি। অপহৃত হয় মা। এরপর আর মায়ের কোনো খোঁজ পাননি।
দীর্ঘদিন পর হারানো মায়ের চিঠি পান ছেলে। চিঠিতে লেখা ছিলো, তিনি পাকিস্তানে আছেন। এখন বাবাকে ফিরে পেয়ে মায়ের জন্য কষ্ট হচ্ছে। একবার হলেও মাকে দেখতে চাই।
কালা মিয়া এখন তার মা হাজেরা খাতুনের জন্য প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছেন। কখন ফিরে আসবে তার মা। এজন্য প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।