এবারের বিপিএলে চট্টগ্রাম পর্বে গতকালই ছিল শেষ দিনের খেলা। এদিন সাগরিকার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে তামিমের খুলনার মুখোমুখি হয়েছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ঘরের মাঠে নিজ দলকে শেষ বারের মতো সমর্থন দিতে এদিন মাঠে দর্শক এসেছিল অন্যদিনের চেয়ে অনেক বেশি।
অবশ্য প্রতিপক্ষ দলের হয়ে খেললেও চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় তারকা তামিম ইকবালের খেলা দেখাও অনেকের উদ্দেশ্য ছিল। তার ওপর ছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিন। এসব কারণে প্রথম ম্যাচেই গ্যালারির দুই-তৃতীয়াংশ ভরে যায় দর্শকে। কিন্তু দর্শকদের হতাশ করে এদিনও হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় স্বাগতিক চট্টগ্রামকে। স্বাগতিকদের ১৫৭ রানের জবাবে ৪ বল বাকি থাকতেই মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তামিমরা।
শুক্রবার গ্যালারিপূর্ণ দর্শকে দিনের শুরুটা ছিল খুলনারই। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা চট্টগ্রামের দ্বিতীয় ওভারেই ম্যাক্স’ও দাউদের উইকেট তুলে নিয়ে খুলনাকে প্রথম সাফল্য এনে দেন সাইফউদ্দিন। তবে দ্বিতীয় উইকেটে উসমান খান ও আফিফ হোসেন প্রাথমিক বিপর্যয় সামলিয়ে ৭০ রানের জুটি গড়লে এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল বড় সংগ্রহ পেতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম। তবে উসমান খান ৪৫ ও আফিফ ৩৫ রান করে আউট হলে মাঝারি মানের সংগ্রহেই (১৫৭) সন্তুষ্ট থাকতে হয় স্বাগতিকদের। এছাড়া এদিন খুলনার পক্ষে ওয়াহাব রিয়াজ চট্টগ্রামের ৪ উইকেট তুলে নেওয়ার পরে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ৪০০ উইকেট শিকারির ক্লাবে প্রবেশ করেন।
চট্টগ্রামের দেওয়া ১৫৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অবশ্য শুরুটা ভালো ছিল না খুলনার। প্রথম ওভারে রানের খাতা খোলার আগেই চট্টগ্রামের অধিনায়কের বলে ফিরতি ক্যাচ দেন ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার। যদিও শুরুর সে সাফল্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি স্বাগতিকদের। দ্বিতীয় উইকেটে মাহমুদুল হাসান জয়কে নিয়ে তামিম ইকবাল ১০৪ রানের জুটি গড়ে দলকে প্রাথমিক জয়ের ভিত গড়ে দেন। ১টি ছক্কা ও ৪টি বাউন্ডারিতে ৪৪ রান করে তামিম ইকবাল এবং ৫টি বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৫৯ রান করে ম্যাচ সেরা মাহমুদুল হাসান জয় আউট হলে স্বাগতিক দর্শকরা আশাবাদী হয়েছিল চট্টগ্রামের ম্যাচে ফেরার। কিন্তু অধিনায়ক ইয়াসির আলীর ১৭ বলে ঝোড়ো ৩৬ রান এবং আজম খানের ১৬ বলে সময়োপযোগী ১৫ রানের দৃঢ়তায় সহজ জয়েই মাঠ ছাড়ে খুলনা।
এ জয়ে খুলনার পয়েন্ট চট্টগ্রামের সমান হলেও রান রেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে টেবিলের চতুর্থ স্থানে উঠে আসে তামিম-ইয়াসিরদের খুলনা টাইগার্স। এদিকে এদিন ম্যাচ জয়ের সঙ্গে দেশ সেরা ব্যাটার তামিমের সাফল্যের মুকুটে আরেকটি পালক যুক্ত হয়। ৪৪ রান করার পথে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৭ হাজার রানের ক্লাবে প্রবেশ করেন তামিম। বাংলাদেশের প্রথম ও বিশ্বের ৪০তম ব্যাটার হিসেবে এই কীর্তি গড়লেন গেল বছর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিদায় বলা তামিম ইকবাল।
এদিন টি-টোয়েন্টিতে ৬ হাজার ৯৯৫ রান নিয়ে চট্টগ্রামের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন তিনি। যা ম্যাচ শেষে ২৪৩ টি-টোয়েন্টিতে তার রান এখন ৭ হাজার ৩৯। এর মধ্যে ৪টি সেঞ্চুরি ও ৪৫টি হাফ-সেঞ্চুরি রয়েছে তার। ব্যাটিং গড় ৩২ দশমিক ০৮ এবং স্ট্রাইক রেট ১১৯ দশমিক ৩৮। তামিমের পরে বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের মালিক দেশ সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তিনি ৩৮৮ ম্যাচে ৬ হাজার ৫৪৬ রান করেছেন।