শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

দগ্ধ মরিয়মের সাহায্যের জন্য দিনমজুর মায়ের মিনতি

আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:২৮

অভাবের তাড়নায় ৮ বছরের মেয়েকে একটি এতিমখানায় রান্নার কাজে দেন দিনমজুর মা। সেখানেই রান্না করতে গিয়ে আগুনে দগ্ধ হয় শিশু মরিয়ম। শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। কিন্তু চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে পরিবারটির নাকাল অবস্থা। তাই সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্য চেয়েছেন দগ্ধ শিশুর মা মমতাজ বেগম।  

শিশু মরিয়ম খাতুন খুলনার পাইকগাছা থানার দরগামহল গ্রামের শেখ লিটনের মেয়ে। তবে নদী ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে লিটন নিরুদ্দেশ। স্ত্রী মমতাজ বেগম এক ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে সাতক্ষীরার তালার রহিমপুর গ্রামে সরকারি গুচ্ছগ্রামে কষ্টের দিন পার করছেন।

এর মধ্যে ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে দগ্ধ মরিয়ম।

জানা গেছে, গত ২৯ ডিসেম্বর সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জালালপুর জেঠুয়া কওমিয়া মহিলা হাফিজিয়া এতিমখানা মাদরাসায় রান্নার সময় আগুনে দগ্ধ হয় শিশু মরিয়ম। তাকে প্রথমে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল এরপর খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে  নেওয়া হয়। সেখান থেকে গত ১৫ জানুয়ারি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

দগ্ধ মরিয়মের মা মমতাজ বেগম বলেন, নয় মাস আগে বড় মেয়ে মরিয়মকে জেঠুয়ার এতিমখানায় দিয়েছিলাম। সেখানে থেকে লেখাপড়া শিখতো। সেখানে রান্না করার কোরো বাবুচ্চি নেই। একটা মেয়ে রান্না করছিল সে গোসলে যাওয়ার আগে মরিয়মকে রান্না ঘরে রান্না দেখার জন্য রেখে যায়। সেখানে জামাকাপড়ে আগুন ধরে যায় মরিয়মের।

তিনি বলেন, আমি দিনমজুরী করে জীবিকা নির্বাহ করি। আমার কোনো টাকা নেই। দৈনিক আট হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। বিভিন্ন মানুষদের কাছ থেকে সহায়তা নিয়ে মরিয়মের চিকিৎসা করছি। আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। মরিয়ম ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটের চারতলায় শিশু ওয়ার্ডে ১৯ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন। বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে গলায় অপারেশন হয়েছে মেয়েটির। সুস্থ হতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সেখানকার চিকিৎসক।

মরিয়মের মামা শফিকুল ইসলাম জানান, হাসপাতাল থেকে কিছু ওষধপত্র দিচ্ছে। বাইরে থেকে দৈনিক অ্যালবোটিন নামের একটি ইনজেকশন কিনতে হচ্ছে তার দাম ৩,৫00 টাকা। এছাড়া আনুসঙ্গিক আরও কিছু ওষধ কিনতে হচ্ছে।

তালার জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটু বলেন, রান্না করতে গিয়ে আগুনে পুড়ে যায় মেয়েটি। পরিবারটি খুবই গরীব। সবার সহযোগিতায় তার চিকিৎসা চলছে। আমি নিজেও সহায়তা করেছি।

ইত্তেফাক/আরএজে