শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

হলে যান না প্রভোস্ট, মৃত্যুসংবাদ টানালেন শিক্ষার্থীরা

আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ২১:৫১

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মনজুরুল হককে ‘মৃত’ ঘোষণা করে পোস্টার সাঁটিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। হলের নানা সমস্যা নিয়ে তাকে বারবার বলার পরও কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় হলের দেয়ালে তার মৃত্যু সংবাদের পোস্টার সাঁটানো হয়েছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে হলের প্রভোস্ট কার্যালয়ের দরজাসহ একাধিক স্থানে তার মৃত্যুর সংবাদ সম্বলিত পোস্টার সাঁটানো দেখা যায়। যা কিছুক্ষণের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পোস্টারে লেখা হয়েছে: 'প্রভোস্ট স্যারের অকাল মৃত্যুতে আমরা জিয়াহল বাসী গভীরভাবে শোকাহত।' তবে কে বা কারা এই পোস্টার লাগিয়েছেন, তা জানা সম্ভব হয়নি।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জিয়াউর রহমান হলের টয়লেট, গোসলখানাগুলো অপরিষ্কার ও ব্যবহার অনুপযোগী, রিডিং রুমে চেয়ার সংকট, ধীরগতির ওয়াইফাই, ব্লকগুলোতে সিসি ক্যামেরা না থাকা ও আলোক স্বল্পতা, একাধিক আবাসিক কক্ষে জেনারেটর লাইন না থাকাসহ নানা সমস্যা থাকায় বারবার বলার পরও হল প্রভোস্ট দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেননি। এমনকি তিনি নিয়মিত হলে আসেন না, নেন না কোনো খোঁজও।

সর্বশেষ, রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি চলাকালীন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা হল প্রভোস্টের স্বাক্ষর নিতে আসলে হলের সহযোগী রেজিস্ট্রার শাহ মো. মিজানুর রহমান প্রভোস্টের বিভাগীয় কক্ষ থেকে স্বাক্ষর এনে দেওয়া বাবদ পিয়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থী প্রতি একশ করে টাকা তোলেন। বিষয়টি হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে জানাজানি হলে তারা হলের সহকারী রেজিস্ট্রার তারিক উদ্দিন আহমেদকে প্রভোস্ট কার্যালয়ে তালাবদ্ধ করে রাখেন। পরবর্তীতে প্রভোস্টের মৃত্যুর সংবাদের পোস্টার সাঁটিয়ে দেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মনজুরুল হক বলেন, এ কাজগুলো কারা করেছে সেটা জানিনা। এতে আমার কিছু যায় আসে না। 

সহযোগী রেজিস্ট্রার শাহ মো. মিজানুর রহমানের ভর্তিচ্ছুদের থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়ে প্রভোস্ট বলেন, হল চার্জের বাইরে কোনো টাকা পয়সা নেওয়ার সুযোগ নেই। বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।

হলে নিয়মিত না আসার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি কতোদিন গিয়েছি সেটা মনে রাখিনি। তবে অফিসের কোনো কাজ ফেলে রাখিনি। আর প্রভোস্টকে সবসময় হলে বসে থাকতে হবে এটা তাদের কে শিখিয়েছে। হলে যদি শিক্ষার্থীরা কোনো সমস্যার কথা অভিযোগ করে তাহলে সেটা সমাধানের বিষয়ে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। আমাকে অভিযোগ দিলে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করি।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, একজনকে প্রভোস্টকে হলের দায়িত্ব দেওয়া হয় হলে শিক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা সেটা দেখার জন্য। আমি শিক্ষকদের কাছে দায়িত্বশীল আচরণ কামনা করি। 

দূরদূরান্ত থেকে যে শিক্ষার্থীরা ভর্তির জন্য আসছে তাদের সহযোগিতা করা তো আমাদের দায়িত্ব। আমি তো অবাক হয়েছি যিনি প্রভোস্টের দায়িত্বে আজকের দিনে তিনি কেনো হলে থাকবেন না। এটা গ্রহনযোগ্য নয়। কোনো কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনৈতিক ভাবে টাকা নেয়ার অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রভোস্ট কার্যালয়ে তালা দেয়ার বিষয়টি প্রভোস্ট মহোদয় প্রশাসনকে অবহিত করেননি। আমরা অন্য মাধ্যমে জানা মাত্র প্রক্টরিয়াল বডিকে পাঠিয়েছি। আমরা এ নিয়ে আলাপ-আলোচনা করবো, উপাচার্যকে বিষয়টি অবহিত করবো। 

ইত্তেফাক/এআই