মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ১৩ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

নামল বাণিজ্য মেলার পর্দা

৩০০ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানির আদেশ, বিক্রি ১০০ কোটি টাকা

আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০৪

মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা গতকাল মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। বাণিজ্য মেলাকে কেন্দ্র করে ৩০০ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানির আদেশ পাওয়া গেছে। বিক্রি হয়েছে ১০০ কোটি টাকার পণ্য। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যৈষ্ঠ অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক এমপি। 

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি, এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আহমেদ বাবু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান। এবারের বাণিজ্য মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৩৩১টি প্যাভিলিয়ন, স্টল ও রেস্টুরেন্ট অংশ নেয়। মেলায় ভারত, হংকং, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালেশিয়া, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড ও নেপালের ১৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। বিভিন্ন ধরনের বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিকস, ইলেকট্রনিকস, বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহসামগ্রী, চামড়া কিংবা কৃত্রিম চামড়া, জুতা, চামড়াজাত পণ্য, খেলাধুলার সামগ্রী, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ও ফার্নিচার প্রদর্শন করা হয়। 

সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন ক্যাটাগরির সেরা প্যাভিলিয়ন, স্টল ও প্রতিষ্ঠানকে ট্রফি প্রদানের মাধ্যমে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। প্রথম পুরস্কার গোল্ড কালার ট্রফি বিভিন্ন ক্যাটাগরির ১০টি সেরা প্যাভিলিয়ন ও স্টলে মধ্যে প্রদান করা হয়েছে। দ্বিতীয় পুরস্কার সিলভার কালার ট্রফি অপর প্রতিষ্ঠানের ১৩টি স্টল ও প্যাভিলিয়নকে ও তৃতীয় পুরস্কার ব্রোঞ্জ কালার ট্রফি বিভিন্ন ক্যাটাগরির ১১টি প্যাভিলিয়ন ও স্টলকে প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া শ্রেষ্ঠ নারী উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে চারটি প্রতিষ্ঠানকে, বেস্ট ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে, বেস্ট ফার্নিচার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে চারটি প্রতিষ্ঠানকে এবং ইনোভেটিভ পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে  দুটি প্রতিষ্ঠানকে ট্রফি প্রদান করা হয়েছে। প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন-এ ক্যাটাগরিতে আবুল খায়ের মিল্ক প্রোডাক্টস লিমিটেড প্রথম, ডায়মন্ড ওয়ার্ড ও তানভীর ফুড (এমজেআই) দ্বিতীয় এবং সেভয় আইসক্রিম ফ্যাক্টরি লিমিটেড তৃতীয় স্থান অর্জন করে। প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন-বি ক্যাটাগরিতে রংপুর মেটাল ইন্ডাস্টিজ লিমিটেড প্রথম, নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেড ও বেঙ্গল পলিমার ওয়্যারস লি. দ্বিতীয় এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) তৃতীয় স্থান অর্জন করে। 

প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন-সি ক্যাটাগরিতে ঢাকা আইসক্রিম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রথম স্থান অর্জন করে। জেনারেল প্যাভিলিয়ন ক্যাটাগরিতে গাজী ইন্টারন্যাশনাল প্রথম, কারা অধিদপ্তর ও আব্দুল মোনেম লিমিটেড (ইগলু) দ্বিতীয় এবং আরএম জুট ডাইভারসিফিকেশন মিলস লি. তৃতীয় স্থান অর্জন করে। রিজার্ভ মিনি প্যাভিলিয়ন/রিজার্ভ মিনি স্টল ক্যাটাগরিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশন (এসএমই) প্রথম, মুক্ত পানি (শারীরিক সুরক্ষা ট্রাস্ট, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়) দ্বিতীয় ও আনন্দ মেলা এবং বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড (মিল্কভিটা) তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন ক্যাটাগরিতে বিআরবি কেবল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রথম, হবিগঞ্জ এগ্রো লিমিটেড ও কাজী এন্টারপ্রাইজেস দ্বিতীয় এবং এক্সক্লোসিভ হোমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লি. তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে।  

প্রধান অতিথি বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বলেন, পণ্য বহুমুখী উত্পাদন ও বাজার সৃষ্টি করতে হবে। শিল্প বিপ্লব ঘটাতে হবে। রপ্তানি আয় আরো বাড়াতে হবে। বিশেষ অতিথি বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, এবারের বাণিজ্য মেলাকে কেন্দ্র করে ৩০০ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানির আদেশ পাওয়া গেছে। আর ১০০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রয় হয়েছে। ঢাকার কুড়িল থেকে ১৪/১৫ মিনিটে বাণিজ্য মেলার স্থায়ী প্যাভিলিয়নে আসা যায়। ৩০০ ফুট সড়কের উন্নয়নকাজ শেষ হওয়ায় এখন আর বাণিজ্য মেলা ঢাকা থেকে দূরে নয়। প্রাকৃতিক ও মনোরম পরিবেশ থাকায় এবারের বাণিজ্য মেলায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ ক্রেতা ও দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। মেলার আয়োজন সার্থক হয়েছে। সফল হয়েছে ব্যবসায়ীরাও। পরে বিজয়ীদের মধ্যে সম্মাননা পদক বিতরণ করা হয়।

ইত্তেফাক/ইআ