বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

এক পেনাল্টি দুবার মিস করে খলনায়ক এমবাপ্পে

গোল করে নায়ক মেসি

আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৩:৪০

২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি। এই দুটি দিনই ভুলে যেতে চাইবেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। ১ জানুয়ারি নতুন বছরের প্রথম দিনেই লেন্সের মাঠে গিয়ে ৩-১ গোলে হেরে যায় পিএসজি। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দলের হার দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারেননি এমবাপ্পে। গত পরশু ১ ফেব্রুয়ারি তো এক পেনাল্টি দুই বার মিস করে খলনায়কই বনে গেছেন পিএসজির ফরাসি তারকা। হতাশার এখানেই শেষ নয়, ম্যাচের মাত্র ২১ মিনিটের মাথায়ই তিনি মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে।

এমবাপ্পের এই ‘ডাবল’ হতাশার দিনেও পিএসজি। মঁপেলিয়রের মাঠে গিয়ে ৩-১ গোলের জয় পেয়েছে নেইমারবিহীন পিএসজি। দলকে জয় এনে দেওয়ার পথে গোল করে নায়ক বনে গেছেন লিওনেল মেসি। আর্জেন্টাইন তারকা গোলটা করে একটা রেকর্ডও গড়েছেন। পেছনে ফেলে দিয়েছেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে।

ম্যাচের ৭ মিনিটেই পেনাল্টি পায়। পেনাল্টি শটটি নেন এমবাপ্পে। কিন্তু তার শট ঠেকিয়ে দেন মঁপেলিয়নের গোলরক্ষক। তবে শট ঠেকিয়ে দিলেও বল বাউন্স খেয়ে আবার চলে আসে এমবাপ্পের পায়ে। মানে এমবাপ্পে দ্বিতীয়বার সুযোগ পান পেনাল্টি থেকে গোল করার। কিন্তু সামনে ফাঁকা পোস্ট পেয়েও এমবাপ্পের ফিরতি শট লাগে পোস্টে!

পেনাল্টি থেকে গোল করার সহজ সুযোগ মিস পিএসজিকে প্রথমার্ধে গোলশূন্যই থাকতে হয়। অবশেষে এমবাপ্পেরই বদলি হিসেবে নামা একিতিকের পাস থেকে ৫৫ মিনিটে পিএসজিকে প্রথম গোলটি এনে দেন ফাবিয়ান রুইজ। ৭২ মিনিটে এই রুইজের পাস থেকেই দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন মেসি। ৮৯ মিনিটে স্বাগতিক মঁপেলিয়রের হয়ে এস মাভিদিদি একটা গোল পরিশোধ করেন বটে; তবে যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে পিএসজির হয়ে তৃতীয় গোলটি করে ম্যাচটা শেষ করে দেন বদলি হিসেবে নামা জায়ার আমেরি।

রোনালদোকে পেছনে ফেলে মেসির রেকর্ড

পরশু কিলিয়ান এমবাপ্পের ‘ডাবল’ হতাশার দিনে লিওনেল মেসি হেসেছেন ‘ডাবল’ প্রাপ্তির আনন্দে। মঁপেলিয়রের বিপক্ষে ম্যাচটাতে মেসি ‘ডাবল’ আনন্দটা পেয়েছেন একটা মাত্র গোল করেই। প্রথমত গোল করে দল পিএসজিকে জয়ে ভূমিকা রেখেছেন। দ্বিতীয় ৭২ মিনিটে করা গোলটির মাধ্যমে আর্জেন্টাইন তারকা গড়েছেন অনন্য এক রেকর্ড।

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে পেছনে ফেলে তিনিই এখন ইউরোপের শীর্ষ ৫ লিগে খেলা খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ গোলের মালিক। তার ক্লাব গোল সংখ্যা হলো ৬৯৭টি। এর মধ্যে ৬৭২টি গোল করেছেন ক্লাব বার্সেলোনার হয়ে। বাকি ২৫টি পিএসজির হয়ে।

কদিন আগেও এই রেকর্ডটা ছিল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দখলে। তবে পর্তুগিজ তারকা ইউরোপ ছেড়ে নাম লিখিয়েছেন সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসরে। এই সুযোগেই রেকর্ডটা ভাগিয়ে নিলেন মেসি। গত ১১ জানুয়ারি অ্যাঁঞ্জার্সের বিপক্ষে গোল করে রোনালদোকে ছুঁয়ে ফেলেন মেসি। পরশু তো টপকেই গেলেন। ইউরোপের শীর্ষ লিগে রোনালদোর গোল সংখ্যা ৬৯৬টি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে দুই মেয়াদে করেছেন ১৪৫ গোল, রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৪৫০টি ও জুভেন্টাসের হয়ে করেছেন ১০১টি।

এছাড়াও স্বদেশি ক্লাব স্পোর্টিং লিসবনের হয়ে ৫টি গোল করেছেন রোনালদো। কিন্তু পর্তুগজি লিগ ইউরোপের শীর্ষ ৫ লিগের তালিকায় নেই। ক্যারিয়ারের শুরুতে স্পোর্টিংয়ের হয়ে করা গোল গুলো এই হিসেবে আসেনি। মানে সব মিলিয়ে ক্লাব গোল সংখ্যায় এখনো রোনালদোই উপরে, ৭০১টি গোল তার।

উল্লেখ্য, ইউরোপের শীর্ষ ৫টি লিগ হলো—ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, স্প্যানিশ লা লিগা, জার্মান বুন্দেসলিগা, ইতালিয়ান সিরি আ ও ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ান।

এমবাপ্পের চোট নিয়ে আতঙ্কে পিএসজি

এক পেনাল্টি দুই বার মিস করার হতাশার ম্যাচেই হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। পরশু মঁপেলিয়রের বিপক্ষে সাত মিনিটে পেনাল্টি মিসের ডাবল হতাশার পর চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ২১ মিনিটে। ফরাসি তারকার চোট তার ক্লাব পিএসজিকে ফেলে দিয়েছে আতঙ্কের মধ্যে। চোট পাওয়া এমবাপ্পে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচটিতে খেলতে পারবেন কি না, তা নিয়েই দেখা দিয়েছে সংশয়।

আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে মুখোমুখি হবে পিএসজি ও বায়ার্ন মিউনিখ। ম্যাচটি হবে পিএসজির ঘরের মাঠ। মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচের আগে এমবাপ্পের মতো তারকা খেলোয়াড়ের চোট পাওয়ায় পিএসজির আতঙ্কিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। যদিও পিএসজি কোচ ক্রিস্টোফার গালতিয়ের ভয় দূর করার চেষ্টা করেছেন। বলেছেন, এমবাপ্পের চোট নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। তাকে ‘সতর্কতামূলক’ তুলে নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে গালতিয়ের এটাও বলেছেন, ‘আশা করি তার চোটটা গুরুতর নয়। পরীক্ষার পরই সত্যিটা জানা যাবে।’

সেই পরীক্ষার ফল এখনো আসেনি। কোচ গালতিয়ের যত যাই বলার চেষ্টা করুন, রিপোর্ট হাতে  পাওয়ার আগ পর্যন্ত পিএসজি শিবিরে আতঙ্কের হাওয়া থাকবেই! আর রিপোর্টে যদি নেতিবাচক ফল আসে তাহলে তো আতঙ্কটা রূপ নেবে হতাশায়।

 

 

ইত্তেফাক/জেডএইচ